খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
১১ বছরেও চালু হয়নি তিন কোটি টাকা ব্যয়ে ছাত্রাবাস

খাগড়াছড়ি পানছড়ি উপজেলায় নির্মাণের ১১ বছর পরও চালু করা হয়নি পানছড়ি বাজার মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসটি। ২০১১ সালে নির্মাণ করা ছাত্রাবাসটি দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয় হয়। আবাসিক সুবিধা না পেয়ে ঝড়ে পড়ছে দুর্গম এলাকার খুদে শিক্ষার্থীরা। তাই দ্রুত ছাত্রাবাস চালুর দাবি করেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, দুর্গম এলাকার শিক্ষার্থীদের স্কুল থেকে ঝড়ে পড়া থেকে ঠেকাতে ছাত্র-ছাত্রীদের নির্মাণ করা হয় এ ছাত্রাবাসটি। প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কমসূর্চির আওতায় ২০১১ সালে প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে হোস্টেল নির্মাণ করা হলেও এখনো চালু করা যায়নি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ছাত্রাবাসের প্রবেশ করতেই চোখে পড়ে জং ধরা অবস্থায় শিক্ষার্থীদের ব্যাঞ্চ বাহিরে পড়ে আছে। অনেক জানালার গ্লাস ভাঙ্গা। ভেতরের কয়েকটি কক্ষে বড় আকারের ফাঁটল দেখা দিয়েছে। পলেস্তার খসে পড়ছে। ছাত্রাবাসটি পেছনের বড় দেয়াল ধসে পড়েছে বসতবাড়ির টিনের ওপর। স্কুল প্রধান শিক্ষক জানান, ছাত্রাবাসে ৩০০ জন শিক্ষার্থী থাকার ব্যবস্থা আছে। আবাসিক সুবিধার অভাবে প্রাথমিকের অনেক শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ছে। তাই দ্রুত ছাত্রাবাসটি চালুর দাবি জানান তিনি।
ছাত্রাবাসের দেয়াল ধসে পড়েছে কলনিপাড়ার বাসিন্দা আফিয়া খাতুনের বাড়ির ওপর। অফিয়া খাতুন বলেন, ‘গত তিন মাস আগে ছাত্রাবাসের বিশাল দেয়াল ধসে পড়ে আমার বাড়ির ওপর। এখন ভাড়া ঘরে থাকতে হচ্ছে। যে কোনো সময়ে ভেঙে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমি শিক্ষা অফিস এবং এলজিইডি অফিসে গিয়েছি কিন্তু কাজ হয়নি।’
পানছড়ি বাজার মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিপাসা সরকার বলেন, ছাত্রাবাসটিতে কী জন্য জনবল নিয়োগ দিচ্ছে না বলতে পারি না। ভবনের পিছনের দিকে ধসে পড়েছে।
পানছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুজিত মিত্র চাকমা বলেন, পরিকল্পনা ও উন্নয়নের পরিচালক এসেছেন। তাকে ছাত্রাবাসটি দেখানো হয়েছে। তিনি বলেছেন ‘এখানে কোনো লোকজন নেই। ছাত্র-ছাত্রীও নেই। আমরা সরকারের টাকা নষ্ট করব কেনো।’ তিনি এসব বলে চলে গেছেন। তিনি আরো বলেন, ৭৫ জন্য ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করার কথা। এখানে ৭৫ জন ভর্তি করবে। এখানে ১৪ জন নিয়োগ করার কথা। লোকই নিয়োগ হয়নি। এখানে ছাত্র-ছাত্রীর ভর্তিও কোনো ব্যবস্থাও নেই। তাদের কে খাওয়াবে সকাল, বিকেল ও দুপুর। এই টাকাগুলো খরচ করারমত কেউ দায়িত্ব নিচ্ছে না।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফাতেমা মেহের ইয়াসমিন বলেন, ‘জনবলের সমস্যা না। জনবল নিয়োগ হতে পারবে। কিন্তু জনবলের বেতন কে দেবে। ডিপাটমেন্ট বলতেছে পিডিপির টু আমলের বিল্ডিং। হয়তো বা একটা সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’
পিডিএস/এস