শরিয়ত উল্যাহ রিফাত, সোনাগাজী (ফেনী) প্রতিনিধি
হাঁটু ভেঙে বৈদ্যুতিক পাখার সঙ্গে ঝুলছিল পপির মরদেহ
ফেনীর সোনাগাজীতে জাহানারা আক্তার পপি নামে ৯ মাসের অন্তঃসত্তা এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় পৌরসভার কোর্ট এলাকায় অবস্থিত শ্বশুর বাড়ি থেকে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের পর শনিবার সন্ধ্যায় তার মরদেহ বাবার বাড়িতে জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে।
গৃহবধূর ৪ বছর বয়সী ছেলে মানুসান আফরান জানিয়েছে, দাদা আবু ইউসুপ তার মাকে হত্যা করে ঘরের বৈদ্যুতিক পাখার সঙ্গে ঝুঁলিয়ে রেখে পালিয়ে যায়। একই দাবি করেন পপির পিতা ও ভাই।
পপি মতিগঞ্জ ইউনিয়নের স্বরাজপুর গ্রামের নেজাম উদ্দিনের মেয়ে। ৫ বছর আগে সোনাগাজী পৌরসভার বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী আবু জাহেদ সুমনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর সুমন সৌদি আরব চলে যান।
পপির ভাই আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, বোনের প্রথম সন্তান জন্মের পর থেকেই শ্বশুর-শাশুড়ি ও ননদ তার ওপর নির্যাতন শুরু করেন। গত বছর সুমন দেশে ফিরে তাদের মিলমিশ করিয়ে দিলেও বিদেশে যাওয়ার পর ফের নির্যাতন করে। গত কয়েক দিন আগে শ্বশুর আবু ইউসুপ ও ননদ লাভলি আক্তার তাকে মারধর করেছেন। এ নিয়ে কথা বলতে গেলে বাবার সঙ্গে পপির শ্বশুর অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এ নিয়ে বিতণ্ডার জেরে তাকে হত্যার পর মরদেহ বৈদ্যুতিক পাখার সঙ্গে ঝুঁলিয়ে রাখে।
পপির ছেলে মানুসান আফরান বলেন, ‘দাদা মাকে পাখার সঙ্গে ঝুঁলিয়ে রাখে। এ সময় দাদার সঙ্গে আরো কয়েকজন লোক ছিল।’
স্থানীয় বাসিন্দা রাহেলা আক্তার নামে গৃহবধূ বলেন, ‘পপির ওপর নির্যাতনের ঘটনা এলাকার সবাই জানে। ঘটনার পর তার শ্বশুর পালিয়ে যাচ্ছে দেখে আমরা তাদের ঘরে যাই। ওই সময় ঘরের সামনে শাশুড়িকে কাঁদতে দেখে আমরা ভেতরে গিয়ে শয়ন কক্ষে পপিকে হাঁটু ভেঙে বৈদ্যুতিক পাখার সঙ্গে ঝুলতে দেখি। পরে পুলিশ এসে তার মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
এদিকে অভিযুক্তদের বক্তব্য জানতে তাদের বাড়িতে গেলে ঘর তালাবদ্ধ পাওয়া যায়। তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য জানা যায়নি।
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান ইমাম বলেন, অন্তঃসত্তা গৃহবধূর মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। যদি তার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দেওয়া হয়, তাহলে গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হবে।
পিডিএস/এএমকে