পরচুলার টুপি তৈরি করে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছেন পাবনা বেড়া উপজেলার নারীদের। এ কাজে জড়িত বেশির ভাগ গৃহহীন ও স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্রী। এ কাজে তাদের নিজেদের আয় সহ পরিবারগুলোতেও এসেছে সচ্ছলতা। উপজেলার নতুন ভারেঙ্গা রাকশা, চকপাড়া গ্রাম, পুরান ভারেঙ্গা, কাশিনাথপুরে মোট চারটি বাড়িতে এ টুপি বানানোর কারখানা রয়েছে। এতে প্রায় আড়াই শতাধিক নারী কাজ করেন।

সরেজমিনে ভারেঙ্গার রাকসা গ্রামের সোহেল রানা ও চকপাড়ার রহিমা খাতুনের পরচুলার টুপির কারখানায় গিয়ে দেখা গেছে, দুটি ঘরে স্থানীয় প্রায় শতাধিক নারী, স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা পরচুলা তৈরির কাজে ব্যস্ত। পরচুলা তৈরি করে প্রতি মাসে ৮-১০ হাজার টাকা আয় করছেন তারা। প্রতিটি টেবিলে স্ক্রুর সাহায্যে আটকানো আছে প্লাস্টিকের ডামি মাথা। ডামি মাথার ওপর রয়েছে নেট। নেটের ফাঁকে সুচের ফোঁড়ে খুব মনোযোগ দিয়ে আটকানো হচ্ছে একেকটি চুল। সূ²ভাবে চুল আটকানো সম্ভব হলেই ক্যাপ তৈরির কাজ শেষ। সোহেলের কারখানার কারিগর সোহানা খাতুন বলেন, ‘প্রায় দুই বছর ধরে আমি এ কাজ করি। সোহেল ভাই কারখানা দেওয়ার পর এখান থেকে এ কাজ শিখে কাজ করছি। মাসে ১০-১২ হাজার টাকা কামাই করা যায়।’

অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী রেশমা আক্তার বলেন, ‘দুই বছর আগে আমার বান্ধবী বৃথী আক্তারের সঙ্গে এখানে কয়েকদিনেই কাজ শিখে কাজ শুরু করি। পড়ালেখার পাশাপাশি রহিমা আপার কারখানায় কাজ করি। অর্থ উপার্জন করে পড়াশোনার খরচ সহ পরিবারকে সহায়তা করা যায়।’

কারখানায় কাজ করা কয়েকজন কারিগর জানায়, পরচুলার একটি টুপি বানাতে সময় লাগে প্রায় দুই থেকে তিন দিন। একজন মাসে ৮ থেকে ১০টি টুপি বানানো যায়। এতে প্রকারভেদে ৫০০ থেকে এক হাজার ৩০০ টাকা মজুরি দেওয়া হয়।

রাকসা গ্রামের কারখানা মালিক সোহেল রানা জানান, তার স্ত্রী সিমা আগে ঢাকায় একটি কারখানায় কাজ করত। তার সঙ্গে পরামর্শ করে তিন বছর আগে এ কারখানা স্থাপন করা হয়। টুপি তৈরির এসব উপকরণ ঢাকা থেকে আনা হয়। পরচুলা তৈরি করে আবার ঢাকায় পাঠানো হয়। আমার এখানে প্রায় একশ নারী শ্রমিক কাজ করেন।

বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোরশেদুল ইসলাম জানান, তিনি শুনেছেন এলাকার স্কুল-কলেজের ছাত্রীরাসহ নারীরা পরচুলার টুপি তৈরির এ কাজ করছেন। এটা খুবই প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এদের কীভাবে সহযোগিতা করা যায় সে বিষয়ে তিনি উদ্যোগ নেবেন বলে জানান।

পিডিএস/এস