রাকিবুল ইসলাম, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
হরিরামপুরে ২৮ বছরের ঐতিহ্যবাহী কালু গাজীর মেলা শুরু
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার সুলতানপুর গ্রামে জিন্দাপীর কালু গাজীর ওরষকে কেন্দ্র করে আজ শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত ৫ দিনব্যাপী মেলার আয়োজন করা হয়েছে। দুপুর থেকে মধ্যরাত অবদি চলে মেলার কার্যক্রম। গত ২৮ বছর ধারাবহিকভাবে মেলার আয়োজন করে আসছেন সুলতানপুর গ্রামের মৃত গোলাপ খানের সন্তান আকবর খান।
গ্রামীণ মেলা বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য। এর শুরুর ইতিহাস জানা না গেলেও গ্রাম গঞ্জে মেলার আয়োজনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সমন্বয়ে গড়ে উঠে এক নিবিড় সম্পর্ক। মেলাকে ঘিরে গ্রমাঞ্চলের মানুষের মাঝে ফিরে আসে প্রাণচাঞ্চল্য।
আগে শুধু জমিদারেরা মেলার আয়োজন করলেও এখন কালের বিবর্তনে বৈশাখ থেকে চৈত্র বারো মাসে তের পার্বনেই দেশের বিভিন্ন স্থানে মেলার আয়োজন চলতে থাকে। বিশেষ করে পীর-ফকির, সাধু-সন্যাসিদের ওরষ ও আস্তানা ঘিরে এ মেলা অনুষ্ঠিত হতে দেখা যায়।
এ মেলাকে কেন্দ্র করে বসেছে গ্রামীন মৃৎশিল্পে নির্মিত শখের হাড়ি, মাটির পুতুলের পসরা। এ ছাড়াও রয়েছে কটকটি, নিমটি, টানা, বরফি, চুড়ি, খেলনাসহ নানান বাহারী পণ্য। সন্ধ্যা থেকে চলতে থাকে ভাব বৈঠকি গান ও যাত্রাপালা।
মেলায় আগত দর্শকদের মধ্য থেকে বলড়া গ্রামের নূরুল আমিন জানান, ছোটবেলায় বাবার হাত ধরে বিভিন্ন মেলা দেখতে যেতাম। সেসব স্মৃতিময় দিনগুলো এখন খুব মনে পড়ে। আজ আমি আমার ৪ বছরের ছেলেকে নিয়ে এ মেলায় ঘুরতে এসেছি। কালের বিবর্তনে শুধুমাত্র বৈশাখী মেলা ছাড়া এখন আর তেমন মেলা দেখা যায় না বললেই চলে।
এ বিষয়ে আকবর খান জানান, দীর্ঘ ২৮ বছর জিন্দাপীর কালু গাজীর ওরষ ও মেলা ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে আসছি। এ মেলা উপলক্ষে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে বৃদ্ধ বয়সের মানুষের আনাগোনায় পরিপূর্ণতা পায়। এ মেলার বিশেষ আকর্ষণ ভাব বৈঠকি গান ও যাত্রাপালা। ৫ দিনব্যাপী এ মেলার ২য় দিনে কালু গাজীর যাত্রা, ৩য় দিন রহিম রুপবান, ৪র্থ দিন বেহুলা লক্ষিণধর ও ৫ম দিন গুনাই বিবি মঞ্চস্থর মধ্য দিয়ে এ মেলার সমাপ্তি হবে।
পিডিএস/এএমকে