হামিদুর রহমান, মাধবপুর(হবিগঞ্জ)

  ১৭ নভেম্বর, ২০২৩

পরিবেশ বিপর্যয় শঙ্কা

মাধবপুরে হাওর ও কৃষিজমিতে অপরিকল্পিত শিল্পায়ন

ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

হবিগঞ্জের মাধবপুরে বিভিন্ন হাওর ও কৃষিজমিতে অপরিকল্পিতভাবে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠায় সংকুচিত হচ্ছে হাওর ও কৃষিজমি। সেই শিল্পপ্রতিষ্ঠান থেকে বের হওয়া বিষাক্ত বর্জ্যে ফসল ও মৎস্য সম্পদ বিনষ্ট এবং জনসাধারণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে চর্মরোগ, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগব্যাধি। পরিবেশ বিপর্যয়ের শঙ্কা সত্ত্বেও নির্বিকার সংশ্লিষ্ট সরকারিসংস্থাগুলো।

জানা গেছে, গত তিন দশকে উপজেলার জগদীশপুর থেকে অলিপুর পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের উভয় পাশে বেসরকারি উদ্যোগে অপরিকল্পিতভাবে অর্ধশতাধিক বৃহত্তর ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। রতনপুর-ছাতিয়াইন অংশেও বেশ কিছু শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এসব ক্ষেত্রে সরকারিভাবে ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন না করে ফসলি জমি বালু দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে। অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠানে বর্জ্য পরিশোধন ব্যবস্থা (ইটিপি) স্থাপন না করে উৎপাদনে গেছে। ফলে বিষাক্ত কেমিক্যালসহ বর্জ্য খালে-বিল-নদীতে ছেড়ে দেওয়ায় উপজেলায় পরিবেশ বিপর্যয়ের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আবার অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ইটিপি থাকা সত্ত্বেও তা যথাযথভাবে ব্যবহার করছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।


  • শিল্পপ্রতিষ্ঠান থেকে বের হওয়া বিষাক্ত বর্জ্যে ফসল ও মৎস্যসম্পদ বিনষ্ট।
  • বাসিন্দাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে চর্মরোগ, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগব্যাধি।
  • সরকারিভাবে ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন না করে ফসলি জমি বালু দিয়ে ভরাট।

আরো জানা গেছে, ৮ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলা বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) কর্মকর্তাদের একটি প্রতিনিধি দল অলিপুর শিল্পাঞ্চল পরিদর্শন করেন। এ সময় স্থানীয় জনসাধারণ বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান থেকে বের হওয়া বিষাক্ত শিল্পবর্জ্য খড়কি গাঙ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার অভিযোগ করেন। বাসিন্দারা জানান, এতে শিবজয়নগর, ছাতিয়াইন, পিয়াইম, খড়কি, সাকুচাইল, মনিপুর, মোড়াকড়ি, জগদীশপুর, একতিয়ারপুর, সাতপাড়িয়াসহ বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন।

পরিবেশকর্মী শামীম জানান, ‘খড়কি গাঙ দিয়ে বিষাক্ত শিল্পবর্জ্য খালটি নদীতে পড়ে পুরো এলাকায় পরিবেশ বিপন্ন করছে।’

বাপা কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল বলেন, ‘হাওরসহ ফসলি জমিতে শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের প্রবণতা অব্যাহত থাকায় জেলার একাধিক উপজেলায় পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় ঘটছে।’

জেলা বাপা সভাপতি অধ্যক্ষ ইকরামুল ওয়াদুদ বলেন, ‘শিল্পপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের ফলে হাওর ও জমির আয়তন উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এগুলো রক্ষায় এখনই ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।’

পরিবেশ অধিদপ্তর হবিগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আক্তারুজ্জামান টুকু বলেন, ‘এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে। এর বেশি কিছুই বলতে পারব না।’

মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনজুর আহসান বলেন, ‘পরিকল্পিত শিল্পায়নের বিকল্প নেই। পরিবেশের ভারসাম্য যাতে বিপন্ন না হয় সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।’

পিডিএস/আরডি

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
হবিগঞ্জ,মাধবপুর,বিষাক্ত বর্জ্য,পরিবেশ বিপর্যয়
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close