ক্ষেতলাল (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি

  ১৭ নভেম্বর, ২০২৩

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল

ঝুঁকিপূর্ণ প্রাথমিক ভবনে পাঠদান,আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা

ক্ষেতলাল উপজেলার ধামশুন্ডা শিবপুর গ্রামে ধামশুন্ডা শিবপুর প্রাথমিকের ভবনের ভেতর খসে পড়ছে পলেস্তারা।-প্রতিদিনের সংবাদ

ভবনের ভিতরে কোথাও উঠে গেছে দেয়ালের রং, খসে পড়ছে পলেস্তারা, বেরিয়ে গেছে ছাদের জরাজীর্ণ রড। ফাটল দেখা দিয়েছে দেয়াল, ছাদ, পিলার ও বিমে। উপায় না পেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। এমনই দৃশ্য দেখা গেছে ধামশুন্ডা শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এটি জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার ধামশুন্ডা শিবপুর গ্রামে অবস্থিত।

সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে, ওই বিদ্যালয় চত্বরের পশ্চিম দিকে একটিমাত্র ভবনই গ্রামের সড়কঘেঁষা। ভবনটির চার কক্ষের মধ্যে তিনটিতে চলে পাঠদান। বাকি একটি কক্ষে বসেন প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরা। শিক্ষার্থীদের সংখ্যার তুলনায় শ্রেণিকক্ষে অর্ধেক এবং কক্ষগুলো যথেষ্ট সংকীর্ণ। যার জন্য দুই শিফটে পাঠদান করতে হয়। ভবনটির বাইরে চকচক করলেও কোথাও দেয়ালের রঙের প্রলেপ উঠে গেছে অনেক আগেই। প্রায়ই খসে পড়ে পলেস্তারা, বেরিয়ে গেছে ছাদের জরাজীর্ণ রডও। ফাটল দেখা গেছে ভবনের দেয়াল, ছাদ, পিলার ও বিমে। ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য একটিমাত্র বাথরুম সেটিও মূল ভবন থেকে দূরে। প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের একমাত্র ব্যবহৃত বাথরুমটি অনেক সময় বাধ্য হয়েই শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করতে দিতে হয়।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ধামশুন্ডা শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। সরকারিকরণ করা হয় ১৯৮৫ সালে। বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৭৯ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ১০৯ জন এবং ছাত্র ৭০ জন। প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষক আছেন ৫ জন।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাস্তুরা তাসনিম বলেন, ক্লাসে মাঝে মাঝে আমাদের উপর ছাদের পালেস্তারা খুলে পড়ে। এভাবে ক্লাস করতে আমাদের অনেক ভয় করে।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি এবং স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু হাসান বলেন, ‘বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য আমি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে অনেকবার বলেছি ও যাবতীয় তথ্যও দিয়েছি। মন্ত্রণালয়েও বহুবার যোগাযোগ করেছি কিন্তু সুফল পাইনি।’

আব্দুল করিম নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘বিদ্যালয়ের ভবন এমন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সন্তানদের পড়তে পাঠিয়ে আতঙ্কে থাকি। এ অবস্থা চলতে থাকলে সন্তানকে অন্য বিদ্যালয়ে বদলি করা ছাড়া উপায় থাকবে না।’

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নাজিম উদ্দিন বলেন, শ্রেণিকক্ষের স্বল্পতার জন্য শিক্ষার্থীদের গাদাগাদি করে বসে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। অপরদিকে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। পাঠদানের সময় প্রায়ই বাচ্চাদের সামনেই পলেস্তারা খুলে পড়ে। বাচ্চারা ভয় পেয়ে যায়। ভবনে বাচ্চাদের জন্য ওয়াশরুম না থাকায় বাচ্চারা অনেক সময় ক্লাসরুমেই নোংরা করে ফেলে।

প্রধান শিক্ষক তোজাম্মেল হোসেন তালুকদার বলেন, ভবনটির ছাদের পলেস্তারা প্রায়ই শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপরে খুলে পড়ে। বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীদের এ ভবনে পাঠদান করা হচ্ছে। নতুন ভবন প্রাপ্তির জন্য বারবার উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত দিয়েছি।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একটি লিখিত আবেদন দিয়েছে। ওটা আমরা আমলে নিয়েছি। শিক্ষা কমিটির রেজুলেশন নিয়ে পাঠিয়ে দিবো। নতুন যেসব ভবন হবে সেগুলোর মধ্যে ওটাও থাকবে।

পিডিএস/আরডি

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
জয়পুরহাট,ক্ষেতলাল,ঝুঁকিপূর্ণ ভবন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close