কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি
গাজীপুরের কালীগঞ্জ
যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ ব্যাপক উন্নয়ন
রাজধানী ঢাকার অদূরে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা। ঢাকা থেকে ৪০ থেকে ৪৫ মিনিটে এ উপজেলায় পৌঁছে যাওয়া যায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার তিন মেয়াদে সারাদেশে যেমন উন্নয়ন করেছেন, তেমনি একই মেয়াদে এ উপজেলায়ও স্থানীয় সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকি করেছেন উন্নয়ন। একটি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নের এ উপজেলায় যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।
জানা গেছে, একসময় কালীগঞ্জ থেকে ঢাকা কিংবা গাজীপুরে আসা-যাওয়া করতে শুধুমাত্র রাস্তার কারণে সারাদিন পার হতো। এখন বর্তমান সরকারের উন্নয়নে পাল্টে গেছে সেই দৃশ্যপট। সড়ক, মহাসড়ক ও সেতুর পাশাপাশি হয়েছে কালভার্ট ও গ্রামীন সড়কের উন্নয়ন। উত্তরা থেকে তেরমুখ ব্রীজ দিয়ে মাত্র ৩০ মিনিটে এবং ৩শ ফিট হয়ে ঢাকা বাইপাস হয়ে পানজোরা-কালীগঞ্জ সড়ক হয়ে মাত্র ৪০-৪৫ মিনিটে এ উপজেলায় আসা যায়। এছাড়াও গাজীপুর-আজমতপুর-ইটাখোলা বাইপাস হয়ে জেলা সদর ও নরসিংদী এবং টঙ্গী-কালীগঞ্জ-ঘোড়াশাল বাইপাস সড়ক হয়ে খুব কম সময়ে কিশোরগঞ্জ, সিলেট ও চট্টগ্রামে যাতায়াত করা যায়। শুধু যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে তা কিন্তু নয়, এ উপজেলায় হয়েছে মহিলা হোস্টেল, জয়িতা মার্কেট, ফায়ার স্টেশন, পৌর ও ইউপি ভবন, ভূমি অফিস, শহীদ মিনার, স্মৃতি স্তম্ভ, পাঠাগার, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, বীর নিবাস, আশ্রয়ণের ঘর, প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নতুন নতুন ভবন। কাজ চলছে মডেল মসজিদের। এছাড়াও ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাওয়ায় কালীগঞ্জকে ইতোমধ্যে শতভাগ বিদ্যুতায়নের উপজেলা ঘোষণা করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের তিন আমলে প্রায় ১৫ বছরে মেহের আফরোজ চুমকি এমপির সংসদীয় আসন কালীগঞ্জে ব্যাপক উনয়ন হয়েছে। এখানে এমন কোন সেক্টর নেই, যেখানে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। বিশেষ করে কালীগঞ্জে যোগাযোগ ও শিক্ষা ব্যবস্থার অবকাঠামগত উন্নয়নের বিপ্লব ঘটেছে।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. সাইফুর রহমান শাকিল বলেন, ২০১০-১১ অর্থ বছর থেকে ২০২২-২৩ অর্থ বছর পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ৮৩ কোটি ৭ লক্ষ ৫ হাজার টাকায় উন্নয়ন কাজ হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম শোভন বলেন, ২০০৯-১০ অর্থ বছর থেকে ২০২২-২৩ অর্থ বছর পর্যন্ত দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ৬ হাজার ৮১৬টি প্রকল্পের মাধ্যমে এ উপজেলায় প্রায় ৭৬ কোটি ৪৩ লক্ষ ৫৩ হাজার ২২৫ টাকার গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ, অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচী এবং সেতু/কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে।
এলজিইডি কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. বেলাল হোসেন সরকার বলেন, ২০০৯ সালের জুন থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত এলজিডিই’র আওতায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ১৮৫ কোটি ৪৮ লক্ষ ৪ হাজার ৯০ টাকার উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। এর মধ্যে সড়ক নির্মাণ-মেরামত, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে ও মেমোরিয়াল, মহিলা বিপণী, ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সে ও ভূমি অফিস নির্মান করা হয়েছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুর রহমান বলেন, বর্তমান সরকারের ৩ মেয়াদে কালীগঞ্জে যুগান্তকারী বেশ উন্নয়ন হয়েছে। যার মধ্যে আট লেন বিশিষ্ট ঢাকা বাইপাস, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের নতুন নতুন ভবন, ভূমি অফিস ভবন, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, জয়িতা মার্কেট ভবন নির্মিত হয়েছে। এর পাশাপাশি ইসলামী ফাউন্ডেশনের মডেল মসজিদ ও সরকারী নতুন নতুন ভবনসহ অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন হয়েছে।
গাজীপুর-৫ (কালীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, ২০০৮ সাল থেকে ৩ টার্ম নির্বাচিত হয়েছে। আমি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে স্থানীয় যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি। এলাকার প্রথমে যেটা জরুরী মনে করে সেটা হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। যখন কোন এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা সুন্দর হয়, সেখানে অটোমেটিক অন্যান্য উন্নয়নগুলো আস্তে আস্তে যুক্ত হতে থাকে। সেখানে গড়ে উঠে নতুন নতুন কল-কারখানা। আর কোন এলাকায় শিল্প কারখানা গড়ে উঠলে স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থান থেকে শুরু করে তারা অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যায়। আমার নির্বাচনী এলাকাও তার ব্যতিক্রম নয়।
চুমকি আরো বলেন, সরকারের তিন মেয়াদে নিজের সংসদীয় আসনকে উন্নয়নের জোয়ারে ভাসানোর চেষ্টা করেছি। আবারও এ আসনে নৌকার প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত হলে আগামীতেও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান স্থানীয় এই সংসদ সদস্য। আর উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত থাকলে প্রধানমন্ত্রীর ভিশন গ্রাম হবে শহর, তা বাস্তবায়িত হবে বলেও মনে করেন নারী নেতৃত্বের এই আইকন।
পিডিএস/আরডি