কলারোয়া (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
কলারোয়ায় ঘোড়া দিয়ে হালচাষ ও পণ্য বহন
ফসলী জমিতে বর্তমান আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি দিয়ে হাল চাষ হচ্ছে। ট্রাক্টরের যুগে গরুর হাল চাষ চোখে পড়ে না বললেই চলে। সেখানে ঘোড়া দিয়ে হাল চাষ যেনো অনেকটা ব্যতিক্রম ঘটনা। এমনকি গরু গাড়ির বদলে ঘোড়া চালিত গাড়ি দিয়ে ফসল আনা-নেয়ার কাজও চলছে পুরোদমে। এমনই দৃশ্য ও ঘটনা দেখা মিলছে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার সুলতানপুর গ্রামে।
জানা গেছে, একসময় মালপত্র ও মানুষ বাহনে ঘোড়া ব্যবহৃত হয়ে এলেও বর্তমানে তা বিলুপ্তির পথে। সেখানে গরুর বদলে ঘোড়া দিয়ে হালচাষ ও পণ্য বহন করে জীবিকা নির্বাহ করছেন সুলতানপুর গ্রামের ১৩জন ব্যক্তি। সম্প্রতি ওই গ্রামের ১৩জন ব্যক্তিকে সুলতানপুর ও কাঁদপুর দক্ষিন মাঠে ১৩টি ঘোড়ার গাড়িতে করে আমন ধান বহন করতে দেখা যাচ্ছে।
সুলতানপুর গ্রামের কৃষি শ্রমিক ও ঘোড়ার মালিক রফিকুল ইসলাম বলেন, বাজারে গরুর চেয়ে ঘোড়ার দাম অনেক কম। সমিতি থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা তুলে আমিসহ আলাউদ্দিন, রহিম, করিম চারজন প্রথমে নড়াইল জেলার তুলোরামপুর থেকে চারটি ঘোড়া ৮ মাস পূর্বে কিনে নিয়ে আসি। প্রথমে ঘোড়া দিয়ে ইরিধানের জমিতে মই দেয়া শুরু করি। বিঘা প্রতি ৩০০ টাকা হারে আমরা একজন সারাদিন ৬ বিঘা জমিতে মই দিয়ে ১৮০০ টাকা আয় করি।
রফিকুল আরো বলেন, আমরা সুলতানপুর গ্রাম থেকে ১৩জন নড়াইলের তুলোরামপুরে জনে (দিনমজুর) যেতাম। ওখানে ঘোড়া গাড়ি দিয়ে ধান বহন করতে দেখি। পরবর্তীতে আমরা বর্তমান ১৩টি ঘোড়ারগাড়ি ও মই দিয়ে ৮ মাসের ভিতরে সমিতির ঋণ পরিশোধ করে আয় রোজগার ভালোই করছি। গরুর চেয়ে ঘোড়া হাটতে পারে বেশি। ফলে একই সময়ে তিনগুন বেশি জমিতে মই বা চাষ দেয়া যায়। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত জমি মই দিয়ে ১৮০০ টাকা আয় করা যায়। এছাড়া ধান ঘোড়া গাড়িতে বহন করা হচ্ছে। বিঘা প্রতি ১হাজার টাকা হিসেবে সারাদিন ৩ বিঘা জমির ধান বহন করা যাচ্ছে। এতে দিনে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় হচ্ছে। ঘোড়ার কয়েকজন মালিক জানান, প্রতিদিন ঘোড়ার খাদ্য ও পরিচর্যা বাবদ খরচ হয় প্রায় ৪০০ টাকার মতো।
স্থানীয় চন্দনপুর ইউপি চেয়ারম্যান ডালিম হোসেন বলেন, এ সময়ে রফিকুল ইসলামসহ ১৩জনের ঘোড়া দিয়ে হাল চাষ ও ধানসহ বিভিন্ন মালামাল বহন করে উপার্জন দেখে অকেকেই অনুপ্রাণিত হচ্ছে। এলাকার চাষিদের কাছে ঘোড়ার দিয়ে চাষাবাদের চাহিদাও বাড়ছে।
কলারোয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শুভ্রাংশু শেখর দাস জানান, ঘোড়া দিয়ে জমিতে হালচাষ, মই দেওয়া ও ঘোড়া গাড়িতে বিভিন্ন ফসল ও মালামাল বহন করে অর্থ আয় করা হচ্ছে। এটা অবশ্যই ভালো লক্ষণ।
পিডিএস/এস