সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জে
কালিয়াহরিপুর জমিদার বাড়ির মসজিদ

সিরাজগঞ্জ-কামারখন্দ আঞ্চলিক সড়কের পাশে সদর উপজেলার কালিয়াহরিপুর জমিদার বাড়ির পুকুর পাড়ে তৈরি করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন জমিদার বাড়ি মসজিদ। জমিদার বাড়ি মসজিদ নামেই এলাকায় মানুষ চেনেন তবে কাগজে-কলমে নাম ‘মসজিদ-এ-নওয়াজিস’। এ মসজিদটি দেখতে দূরদূরান্ত থেকে অনেক দর্শনার্থী আসেন। দূর থেকেও নামাজ পড়তে মসজিদটিতে আসেন অনেকে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মসজিদটির সীমানা গ্রাচীরের ভেতরে ঢুকলেই চোখে পড়ে স্বচ্ছ পানির গভীর মাঝারি আকারের একটি পুকুর। পুকুরের পশ্চিম পাড়েই স্থাপিত হয়েছে ‘মসজিদ-এ-নওয়াজিস’ নামের দ্বিতল এ মসজিদটি। আকারে খুব বড় না হলেও মসজিদটির অপরূপ নির্মাণশৈলীতে মুগ্ধ হবে অনেকে। পুকুরের পানির মধ্য থেকে গেঁথে তোলা হয়েছে মসজিদটি। মসজিদের সামনের অর্ধ-চন্দ্রাকৃতির সিঁড়িগুলো শেষ হয়েছে পুকুরের তলদেশে গিয়ে। সিঁড়ির ওপরে উঠলেই দেখা যায় মসজিদ প্রাঙ্গণটি সম্পূর্ণ টাইলসে করা। এর পূর্বপাড়ে অর্থাৎ মসজিদের সামনে ওপাড়ে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন সিঁড়ি। ওই সিঁড়ির উপরিভাগে করা হয়েছে দর্শনীয় ফটক। এছাড়া পুকুরের চারদিকের পাড় সবুজ ঘাসে সাজানো হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ব্রিটিশ আমলে কালিয়াহরিপুর গ্রামের শ্যাম শঙ্কর মৈত্র নামে এক জমিদার ছিলেন। পাকিস্থান আমলে ওই জমিদারের বংশধররা তাদের স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পত্তি ডা. নওশের আলী তালুকদারের কাছে বিক্রি করে ভারতে পাড়ি জমান। এরপর থেকে ওই সম্পত্তি ডা. নওশের আলী তালুকদার ও তার মৃত্যুর পর ওয়ারিশরা ভোগদখল করতে থাকেন। প্রায় ২৫ বছর আগে ডা. নওশের আলীর বড় ছেলে নওয়াজিস আলী জমিদারদের ওই পুকুর পাড়ে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। তখন থেকেই ‘মসজিদ-এ-নওয়াজিস’ নামে নামকরণ করা হয় এটির। নওশের আলী তালুকদারের সন্তানদের কেউ আমেরিকায় ও কেউ ঢাকায় থাকেন। তারা এলাকার বাইরে থাকলেও ডা. নওশের আলী তালুকদার ফাউন্ডেশন নামে একটি সংগঠনের মাধ্যমে এলাকার দুস্থ-অসহায় মানুষদের কল্যাণে কাজ করছেন। এরই অংশ হিসেবে প্রায় দেড় বছর আগে এ মসজিদটিকে সংস্কার করে দৃষ্টিনন্দন করা হয়।
মসজিদের কেয়ারটেকার আবদুল হাকিম বলেন, আমরা দুজন সার্বক্ষণিক মসজিদটির দেখভাল করি। প্রতিদিন দুই বেলা মসজিদ প্রাঙ্গণ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়।
মসজিদের ইমাম শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি ১৩ বছর ধরে এ মসজিদটিতে নামাজ পড়াচ্ছি। বর্তমানে দৃষ্টিনন্দন হওয়ার কারণে দিন দিন এখানে মুসল্লির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। আড়াইশ মুসল্লি ধারণক্ষমতাসম্পন্ন এ মসজিদ জুমার নামাজের দিন কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।
ডা. নওশের আলী তালুকদারের ছেলে জুলফিকার হায়দার জানান, কালিয়াহরিপুর এলাকায় প্রায় এক একর জমির ওপর পুকুর এবং ওই পুকুর পাড়েই মসজিদটি স্থাপন করা হয়েছে। কয়েক ধাপে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। এর সঠিক ব্যয়ের পরিমাণ নির্ধারণ করা যায়নি।
পিডিএস/আরডি