তাজুল ইসলাম পলাশ, কক্সবাজার
কক্সবাজার দুই সপ্তাহে ২২ হাজার কর্মচারী ছাঁটাই
দেশের পর্যটন রাজধানী হিসেবে খ্যাত সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে ছুটির দিন ছাড়াও ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যটক থাকে। এছাড়া, সরকারি ছুটির দিনগুলোতে থাকে লক্ষাধিক পর্যটক। এতে করে পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত হোটেল মোটেল, রেস্তোরাঁসহ সব ব্যবসা চাঙ্গা থাকে। এর ফলে ব্যবসায়ীরা যেমন লাভবান হয় তেমনি আয়ের একটি অংশও যোগ হয় রাজস্ব খাতে। কিন্তু গত ২৮ অক্টোবর থেকে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো একের পর এক হরতাল ও অবরোধ ডাকায় প্রভাব পড়েছে পর্যটন শিল্পে। কর্মচঞ্চল হোটেল মোটেল জোনে এখন পর্যটক নেই বললেই চলে। সাগর তীরের বিভিন্ন পয়েন্টও নেই পর্যটক। মৌসুমে পর্যটন শূন্য পরিস্থিতিতে হতাশ হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
গত বুধবার সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্ট গিয়ে দেখা যায়, সৈকতে তেমন পর্যটক নেই। ফটোগ্রাফার, বিচ বাইক-ওয়াটার বাইক চালক ও ঘোড়াওয়ালাদের তেমন চোখে পড়েনি। চটপটি ও ফুসকা এমনকি নামিদামি রেস্তোরাঁয়ও তেমন নেই ক্রেতা। তবে কিছু পর্যটক দেখা গেছে ব্যস্ততম সুগন্ধা পয়েন্টে।
শফিক নামের এক পর্যটক বলেন, বেড়াতে আসিনি, কাজে এসেছি। আমদানি কাজে জরুরি কক্সবাজারে আসা। ৫০০ টাকা মূল্যর একটি হোটেলে উঠেছি। ব্যবসায়ীরা জানান, শীতে পর্যটন ব্যবসা ভালো হয়। কিন্তু গত দুই সপ্তাহ ধরে মোটেও পর্যটক নেই।
ঝিনুক ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন জানান, শীতকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু চলমান রাজনীতি পরিস্থিতির কারণে অনেকে ব্যবসা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার জানান, গত দুই সপ্তাহে হোটেলের ২২ হাজার কর্মচারী ছাঁটাই হয়েছে। যেখানে ৫০-৬০ কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থায় চলতে থাকলে অচিরেই বন্ধ হয়ে যাবে অনেক হোটেল।
- পর্যটন খাতে ক্ষতি ৬০ কোটি টাকা
- হোটেলগুলোতে নেই ২০ শতাংশ পর্যটকও
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কক্সবাজার হোটেল মোটেল জোন, মেরিন ড্রাইভ সড়ক, টেকনাফ ও সেন্ট মার্টিনে প্রায় ৫ শতাধিকের ওপরে। যেখানে রাতে থাকার সুযোগ রয়েছে লক্ষাধিকের মতো। সরকারি ছুটির দিনে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ রুম বুকিং থাকে। এছাড়া, বিশেষ দিনে ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ রুম বুকিং হয়। এমনকি রুম না পেয়ে অনেকে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়েছেন।
হোটেল রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি নাঈমুল হক টুটুল বলেন, অনেক খাবারের দোকান ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। লোকসানে পড়েছে শত শত হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিক।
চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি কক্সবাজারের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, হঠাৎ করে অবরোধের কারণে পর্যটক আসা বন্ধ হয়ে গেছে। হোটেলগুলোতে ২০ শতাংশ পর্যটকও নেই। এ কদিনে ৫০ থেকে ৬০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া, কর্মচারী ছাঁটাইয়ের কারণে কয়েক হাজার মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে।
পিডিএস/জেডকে