এম এ লিতু, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ)
কালীগঞ্জের পাচকাহুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়
সুস্থ শিক্ষার্থীদের প্রতিবন্ধী দেখিয়ে টাকা উত্তোলন
বিতরণ হয়নি অসহায় শিক্ষার্থীদের টাকাও
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে প্রতিবন্ধী না হলেও ছয় শিক্ষার্থীদের নামে পিবিজিএসআই স্কিমের টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছে এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। উপজেলার পাচকাহুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষার্থীরা জানান তারা প্রতিবন্ধী না। অথচ তাদের নাম ব্যবহার করে টাকা তুলে নিজের কাছে রেখেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসেম আলী। তা ছাড়া অসহায় শিক্ষার্থীদের জন্য পাওয়া টাকাও বিতরণ করা হয়নি।
জানা গেছে, পারফমেন্স বেজড গ্রাউন্টস ফর সেকেন্ডারি ইনসটিটিউশন (পিবিজিএসআই) স্কিমে পাচকাহুনিয়া বিদ্যালয়ে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ৫০ হাজার ও অসহায় সুবিধা বঞ্চিত শিক্ষার্থীদের জন্য ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।বরাদ্দের টাকা বিদ্যালয়ের প্রতিবন্ধী ৬ শিক্ষার্থী ৫০ হাজার টাকা ও অসহায় সুবিধা বঞ্চিত ১৫ শিক্ষার্থী ৫ হাজার টাকা করে মোট ৭৫ হাজার টাকা পাওয়া কথা। কিন্তু নথি এই নির্দেশ থাকলেও বাস্তবে এর মিল নেই।
- প্রতিবন্ধী তালিকায় থাকা কয়েকজন জানে না তাদের নামে টাকা বরাদ্দ এসেছে।
- পিবিজিএসআই স্কিমের টাকা আত্মসাৎ চেষ্টার অভিযোগ প্রধান শিক্ষক হাসেম আলীর বিরুদ্ধে।
- সংসদ সদস্যে উপস্থিতিতে টাকা বিতরণ করা হবে বলছেন প্রধান শিক্ষক।
এদিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসেম আলী ও বিদ্যালয়টির সভাপতি কাজল বরন সরকার স্বাক্ষরিত একটি ভাউচারে প্রতিবন্ধী তালিকায় থাকা বিদ্যালয়টির এক শিক্ষার্থীকে ১০ হাজার ও অন্য ৫ শিক্ষার্থীকে ৮ হাজার টাকা করে মোট ৫০ হাজার টাকা বিতরণের কথা উল্লেখ করেছেন।
অথচ প্রতিবন্ধী তালিকায় থাকা বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল্লাহ জানেই না তার নামে ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ এসেছে। তালিকার সপ্তম শ্রেণির ছাত্র তানভির, নবম শ্রেণির ছাত্র হাসিব টাকা না পাওয়াার কথা প্রতিবেদককে জানিয়েছেন। তালিকায় থাকা আরেক ছাত্র ষষ্ঠ শ্রেণি পড়ুয়া মিজানকে তথ্য সংগ্রহের সময় বিদ্যালয়ে পাওয়া যায়নি।
অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী লিমা খাতুন বলে, ‘আমি সম্পূর্ণ সুস্থ। জানতে পারলাম আমি ৮ হাজার টাকা পাব।’
অপর দিকে সরজমিনে জানা গেছে, অসহায় সুবিধা বঞ্চিত শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দকৃত ৭৫ হাজার টাকা এখনো বিতরন করা হয়নি। অভিযোগ বিষয়ে জানতে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক হাসেম আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। প্রশিক্ষণের জন্য ছুটিতে থাকার কারণে মোবাইল ফোনে বলেন, ‘টাকা আছে। এমপি সাহেবের উপস্থিতিতে দিব, তাই দেরি হচ্ছে।’
জানতে চাইলে বিদ্যালয়টির সভাপতি কাজল বরন সরকার জানান, ‘প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে আমি জানি না। এ তালিকা শিক্ষকেরা করেছেন। আর অর্থ বিতরণ না করার ঘটনাটি সত্য।’
কালীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফারুক আহম্মেদ বলেন, ‘প্রতিষ্ঠান হয়তো টাকা বিতরণ করার সময় পাইনি। আর এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠান ভালো জবাব দিতে পারবে।’
পিডিএস/আরডি