জহির রায়হান, কাউনিয়া (রংপুর)
রংপুরের কাউনিয়া
প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগরেরা
হিন্দু সম্প্রদায়ের বড় ধর্মীয় শারদীয় দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে মন্দিরগুলোতে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। রংপুরের কাউনিয়ায় দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে নিপুণ হাতে কাদামাটি, খড়, বাঁশ, সুতলি ও রং দিয়ে তৈরি হচ্ছে প্রতিমা। প্রতিমা তৈরির কাজে দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা।
সরেজমিনে বিভিন্ন মন্দির ঘুরে দেখা গেছে, মন্দিরে কারিগররা ফুটিয়ে তুলছেন দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ-কার্তিক ও অসুরের প্রতিমা। বেশির ভাগ মন্দিরের জন্য দুর্গার অর্ডার করে রেখেছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজ আবার কোথাও শুরু হয়েছে রংয়ের কাজ। আগামী ১৩ অক্টোবর মহালয়ার মধ্যে দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়বে। ১৯ অক্টোবর মহা পঞ্চমী, ২০ অক্টোবর ষষ্ঠী, ২১ অক্টোরর সপ্তমী, ২২ অক্টোবর অষ্টমী, ২৩ অক্টোবর নবমী ২৪ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্যে দিয়ে ৫ দিনব্যাপী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গা পূজার পরিসমাপ্তি ঘটবে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দেবী তৈরির কারিগরেরা এসেছেন কাজে। দুর্গাপূজা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব হিসেবে পালিত হয়। ঢাকের তালে আর শিউলীর মিষ্টি গন্ধে পুরো দেশে দুর্গাপূজার হাওয়া বইতে থাকে। প্রতিমা শিল্পীর কল্পনায় দেবী দুর্গার অনিন্দ্য সুন্দর রূপ দিতে সকাল থেকে শুরু করে রাতভর চলছে কাজ।
- ৬৭ মন্দিরে বসবে পূজামণ্ডপ
- ১৩ পূজামণ্ডপ ঝুঁকিপূর্ণ
- মন্দিরগুলোতে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি।
কাউনিয়ার মা মৃৎ শিল্পালয়ের পরিচালক প্রতিমা শিল্পী তাপস রায় বলেন, কাউনিয়ায় এখানে রেডিমেড দুর্গা প্রতিমা পাওয়া যায়। অর্ডার অনুযায়ী বিভিন্ন প্রতিমা তৈরি করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করি। আমি এবার ২৭টি মন্দিরের প্রতিমার অর্ডার পেয়েছি। কাউনিয়া কেন্দ্রীয় গোপালগঞ্জ সার্বজনীন শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব গোস্বামী বলেন, উচু-নিচুর বিভেদ ভুলে সমাজের সব স্তরের মানুষকে একত্রে করে মহা-মিলন হয় বলে এ পূজাকে বলা হয় সার্বজনীন পূজা। আর শরৎকালে হয় বলে বলা হয় শারদীয় উৎসব। আর দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে পূজা উদযাপন কমিটি ব্যস্ত সময় পার করছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কাউনিয়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কমল কুমার সরকার বলেন, এ উপজেলায় এবারে ৬৭ মন্দিরে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে সারাই ইউনিয়নে ৪, হারাগাছ ইউনিয়নে ৪, শহীদবাগ ইউনিয়নে ৬, কুর্শা ইউনিয়নে ১৪, বালাপাড়া ইউনিয়নে ২৫, টেপামধুপুর ইউনিয়নে ১৪টি মন্দিরে পূজামণ্ডপ বসবে। এর মধ্যে ১৩ পূজামণ্ডপ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের শিশু, নারী-পুরুষসহ সব বয়সী মানুষ শারদীয় উৎসবকে সার্থক করতে প্রহর গুনছে। সব মিলিয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে পূজামণ্ডপ গুলোতে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোন্তাছের বিল্লাহ জানান, ইতোমধ্যেই পুলিশি তদারকি শুরু হয়েছে। প্রতিটি পূজা মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের চেষ্টা চলছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহিদুল হক জানান, দুর্গাপুজা উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
পিডিএস/আরডি