কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
পূর্ব শত্রুতার জের
নাগেশ্বরীতে পল্লীকবি খ্যাত রাধাপদ রায়ের ওপর হামলা
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে পূর্ব শত্রুতার জেরে সময়ের পল্লীকবি খ্যাত স্বভাব কবি রাধাপদ রায়ের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলার শিকার কবি রাধাপদ রায় (৮০) গুরুতর আহত অবস্থায় বর্তমানে নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নাগেশ্বরী থানায় মামলা করেছেন রাধাপদ রায়ের ছেলে জুগল রায়। রবিবার (১ অক্টোবর) রাতে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাগেশ্বরী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশিকুর রহমান। পল্লীকবি রাধাপদ সরকার নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নের মাধাইখাল গোড্ডারাপাড় বটতলা এলাকার বাসিন্দা।
এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পার্শ্ববর্তী কচুয়াপাড় এলাকার রফিকুল ইসলাম (৩৫) ও কদুর রহমানের (৪৫) সঙ্গে প্রায় ৭ বছর আগে কথা কাটাকাটির জের ছিল। সেই পূর্ব বিরোধের জেরে প্রায় তারা কবি রাধাপদ রায়কে মারধর, ভয়ভীতিসহ নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এক পর্যায়ে গেল ৩০ সেপ্টেম্বর সকালের দিকে রাধাপদ রায় বাড়ির পাশের ডুবুরির সেতুর কাছে মাছ ধরতে গেলে সেখানে অস্ত্রশস্ত্র ও লাঠিশোঠা নিয়ে ওঁৎ পেতে থাকা রফিকুল ও কদুর মিলে তার ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে আহত করে। এসময় তার চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। বর্তমানে তিনি ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
রাধাপদ রায়ের ছেলে জুগল রায় বলেন, ‘প্রায় ৭ বছর আগে আমার বড় ভাইয়ের সাথে অন্য একজন লোকের লেনদেন ছিল। সে সময় ওই ব্যক্তির পক্ষ নিয়ে কদুর রহমান আমাদের বাড়ির লোকজনকে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ করে। সেদিন বাবা এসব শুনে প্রতিবাদ করলে আমার বাবাকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে বাড়ি থেকে চলে যায়। পরে তখন থেকে তারা আমার বৃদ্ধ বাবাকে মারার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়াসহ আক্রমণের সুযোগ খুঁজছিল। পরে বাবা সেদিন মাছ ধরতে গেলে সুযোগ বুঝে বাবার ওপর হামলা করে প্রাণ নাশের চেষ্টা চালায়। আমার বৃদ্ধ বাবাকে তারা যেভাবে মেরেছে, তা বলে শেষ করতে পারব না। আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে ন্যায় বিচারের দাবি জানাচ্ছি।’
রাধাপদ রায়ের স্ত্রী মিনতি রানী বলেন, ‘আমরা সংখ্যালঘু আর গরিব বলে কি আমাদের সমাজে কোনো দাম নাই? আমার স্বামী বিভিন্ন জায়গায় কবিতা বলে, গান গেয়ে যে কয় টাকা আয় করে তা দিয়ে আমাদের সংসার চলে। আর তার উপর এভাবে অত্যাচার করেছে। আমি ওই সন্ত্রাসীদের বিচার চাই।’
এ বিষয়ে থানার ওসি আশিকুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে তাকে দেখার জন্য হাসপাতালে গিয়েছেন। তিনি এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য গত ১ অক্টোবর এবং ২ অক্টোবর যাওয়া হয়েছে। তারা পলাতক আছে। তবে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। উল্লেখ্য কবি রাধাপদ রায় ইতোমধ্যে তার লেখা কবিতা “কেয়ামতের নমুনা, জানি কিন্তু মানি না” “বউয়ের কান্ড” শিরোনামে কবিতা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
পিডিএস/আরডি