সালাহ্উদ্দিন শুভ, কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার)
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ
টানা ছুটিতে বিনোদন কেন্দ্রে পর্যটকদের ভিড়

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ও সরকারি টানা ছুটিতে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে মৌলভীবাজার। জেলার কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গলের টিলাঘেরা সবুজ চা বাগান, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধ, নয়নাভিরাম মাধবপুর লেক, হামহাম জলপ্রপাত, মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জি, ডবলছড়া খাসিয়া পুঞ্জিসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলোতে যেন পা ফেলার ঠাঁই নাই। শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পর্যটকদের চাপ দেখা যায়। তাদের গন্তব্য চায়ের রাজ্যের বিভিন্ন পর্যটন স্পট। কেউ আগেই হোটেল বুকিং দিয়ে রেখেছেন আবার কেউ ছুটছেন বুকিং দিতে।
এদিকে, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের টিকিট কাউন্টার থেকে জানা যায়, শুধু শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান থেকে সরকারের রাজস্ব আদায় হয়েছে প্রায় ৭১ হাজার আটশত ৮ টাকা। অন্যদিকে, ঈদে পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) সঞ্জয় চক্রবর্তীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি টীম সকাল থেকে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত প্রতিটি জায়গায় টহল দিতে দেখা যায়।
লাউয়াছড়ায় জাতীয় উদ্যানে ঘুরতে আসেন ঢাকা থেকে মামুন হাসান আহমদ, ঢাকা নরসিংদীর গার্মেন্স কর্মী মনি বেগম, শায়েস্তাগঞ্জের কলেজ ছাত্র অভি, সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রী প্রিয়াঙ্কা ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মিনারা খাতুন জানান, ‘কমলগঞ্জের লাউয়াছড়ার বন একটি সমৃদ্ধ বন। প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্য আর জীব বৈচিত্র্যে ভরপুর এই বনটি যে কেউ দেখলে মন জুড়িয়ে যাবে।’
বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধ, মাধবপুর লেকে ও লাউয়াছড়া ঘুরতে যাওয়া সিলেট মহিলা কলেজের ছাত্রী আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, ‘এখানে এসে খুবই ভালো লাগছে।
লাউয়াছড়া টিকেট কালেক্টর শাহিন আহমদ জানান, ‘শুক্রবার পর্যটকের উপচেপড়া ভিড় ছিল। সামাল দিতে তাদের হিমসিম খেতে হচ্ছে। এভাবে আগে কখনো হয়নি। শুক্রবার মোট পর্যটক এসেছেন ১ হাজার ৩২৩ জন। প্রাপ্তবয়স্ক ১ হাজার ১১২জন, ছাত্র ১৯০ জন, বিদেশি ২১ জন। মোট রাজস্ব আয় হয়েছে ৭১ হাজার ৮০০ টাকা।’
লাউয়াছড়া ইকো টুরিস্ট গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সহসাধারণ সম্পাদক মো. আহাদ মিয়া বলেন, ‘ছুটিতে লাউয়াছড়াসহ সব পর্যটনকেন্দ্রে প্রচুর পর্যটকের আগমন হয়। পর্যটকের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো ছিল।’ বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের লাউয়াছড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, ‘সময়ের তুলনায় পর্যটকের সমাগম অধিক ঘটেছে।’
ওসি সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, ‘নির্বিঘ্নে পর্যটকরা যেন ঘুরতে পারে সে জন্য আমরা তাদের নিরাপত্তার জন্য পর্যবেক্ষণ করছি।’
শ্রীমঙ্গলের ওয়াটারলিলি রিসোর্টে এমডি ওয়ালিদ আহসান নাহিদ বলেন, ‘গত কয়েকদিন থেকে আমার হোটেলে কোনো রুম খালি নেই। মানুষ আমাদের শ্রীমঙ্গলে ঘুরতে আসছেন এটা আমাদের জন্য আনন্দের। তবে তাদের রুম দিতে পারতেছি না এটা একটু খারাপই লাগছে।’
ট্যুরিস্ট পুলিশ শ্রীমঙ্গল জোনের ইনচার্জ প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য আমরা সবসময় নিয়োজিত আছি।’
পিডিএস/আরডি