রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
রৌমারীতে রাস্তা পাকাকরণ কাজে অনিয়ম
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে রাস্তা পাকা করণের কাজে ব্যাপক অনিয়মের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী। সম্প্রতি উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল সীমান্ত এলাকা রৌমারী সদর ইউনিয়নের নওদাপাড়া গ্রামে এ বিক্ষোভ মিছিল করেন এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী জানান, উপজেলা প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে রাস্তাটিতে মাটি ভরাটের কিছুটা কাজ শেষ করেই বন্ধ রাখে। এ নিয়ে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকটনিক্স মিডিয়ায় প্রচার হলে প্রশাসনের টনকনড়ে। এবং চলতি মাসে পুনরায় পাকা করণের কাজ শুরু করেন। গত কয়েকদিন থেকে তড়িঘড়ি করে নামকাওয়াস্তে বিটুমিন ছাড়াই কার্পেটিং ও সিলকোডের কাজ করতে থাকেন। উপজেলা প্রকৌশলী দপ্তরের ওয়ার্ক অ্যাসিস্টেন হারুনর রশিদ উপস্থিত থেকেও রাস্তার কাজে অনিয়ম করা হচ্ছে। এ নিয়ে এলাকাবাসী বাধা দিলেও তাদের কথা শুনেনি তারা। ফলে কার্পেটিং ও সিলকোড সম্পূর্ণ ভেসে উঠে এবং বৃষ্টির সঙ্গে ওই কার্পেটিং ভেসে যাচ্ছে।
উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের শেষের দিকে উপজেলার চর নতুনবন্দর স্থলবন্দর তুরা রাস্তা হতে সীমান্ত এলাকা দিয়ে খাটিয়ামারী কাদেরের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তা মাটি ভরাট ও পাকা করনের জন্য ২ কোটি ৩৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। যা টেন্ডারের মাধ্যমে কুড়িগ্রামের মেসার্স সাকিব ট্রেডার্স উক্ত কাজটি পায়। পরে মেসার্স সাকিব ট্রেডার্স মালিক ঠিকাদার প্রো. মো.আহসানুল লিটন স্থানীয় সাইদুর রহমান নামের এক ব্যক্তিকে দিয়ে রাস্তাটির কাজ আবারো শুরু করেন। রাস্তাটির তিন স্থানে গাইড ওয়াল দেওয়ার কথা থাকলেও ড্রাম দিয়ে গাইডওয়াল দেওয়া হয়েছে।
উপজেলার নওদাপাড়া গ্রামের নওশেদ আলী বলেন, ‘ওয়ার্ক অ্যাসিস্টেন হারুনর রশিদের উপস্থিতিতে রাস্তার উপর দিয়ে ছোট পাথর ফেলানোর কয়েক দিনের মাথায় ওই পাথরগুলো আলগা হচ্ছে। হাত দিয়ে সব পাথর জড়ানো যায়। এরকম কাজ করলে রাস্তাটি টিকবে না।’
স্থানীয় বাসিন্দা জবেদ আলী বলেন, ‘রাস্তার কাজ এত খারাপ করছে এর আগে কোথাও দেখি নাই। ঠিকাদার সাইদুর ও প্রকৌশলী অফিসের হারুন নামের লোকটিকে কাজের ব্যাপারে বলতে গেলে তারা আমার উপর রেগে যায় এবং আমাকে হুমকি ধামকি দেয়।’
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সাফ ঠিকাদার সাইদুর রহমান বলেন, ‘রাস্তার পাকাকরণের কাজ চলমান রয়েছে। কিছু জায়গায় সমস্যা হয়েছে সেটা ঠিক করে দিবো।’
উপজেলা ওয়ার্ক অ্যাসিস্টেন হারুনর রশিদ বলেন, ‘আমি কাওকে হুমকি দেই নাই। রাস্তার কাজ করতে গিয়ে কিছু সমস্যা হচ্ছে, তবে সিলকোডের কিছু কাজ বাকি রয়েছে এবং সেটা দ্রুত ঠিক করা হবে।’
উপজেলা প্রকৌশলী মামনুর রহমান এর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ হাসান খান বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। কাজ যদি নিম্নমানের হয়ে থাকে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে আইনানুক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
পিডিএস/আরডি