রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
রামগঞ্জে বীমার টাকা জমা দিতে এসে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু

রামগঞ্জে ন্যাশনাল লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির অফিসে বীমার টাকা জমা দিতে আসা মরিয়ম বেগম (৩০) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যুর পর তার লাশ উদ্ধার করছেন থানা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বাইপাস সড়কের রামগঞ্জ টাওয়ারের নীচতলা লিফটের রুমের পেছন থেকে এই লাশ উদ্ধার করা হয়। মরিয়ম বেগম নোয়াগাও ইউনিয়নের নোয়াগাও গ্রামের শ্রমিক মনির হোসেনের স্ত্রী ও দুই সন্তানের জননী।
মরিয়মের স্বামী মনির হোসেন জানান, সকালে ন্যাশনাল লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির মাঠকর্মী লিটন সরকার মোবাইল করে তার স্ত্রীকে বীমার টাকা জমা দিতে আসতে বলে। পরে দুপুর ১২টার সময় তার স্ত্রী সন্তান মিরাজকে (৪) নিয়ে রামগঞ্জ টাওয়ারের ৪র্থ তলায় বীমা কোম্পানির অফিসে আসে। বেলা সাড়ে ৩টায় অফিস থেকে আবু নাসের নামের একজন মাঠকর্মী মোবাইল করে তার স্ত্রীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ও সন্তানটি কান্নাকাটি করছে এ খবর দেয়। পরে তিনি ঘটনাস্থলে এসে মার্কেটের ম্যানেজারকে শিশু সন্তান মিরাজের দেখানো অনুযায়ী নীচতলা লিফটের রুমে মরিয়মের লাশ দেখতে পায়। মনির হোসেন আরো জানান, বীমা কোম্পনির মাঠকর্মী লিটন সরকার প্রায় তার স্ত্রীকে মোবাইল করে বিভিন্ন কথা বলতো।
মৃত মরিয়মের সন্তান মিরাজ হোসেন (৪) টাওয়ারের পরিত্যক্ত ৫ম তলার লিফটের পাশে একটি সুড়ঙ্গ দেখিয়ে বলে, স্যার আমার মাকে এখান দিয়ে পেলে দিয়েছে। এখন আমি আমার মাকে খুঁজে পাই না।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, টাওয়ারের ৪র্থ তলায় ন্যাশনাল লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির অফিস। ৫ম তলায় ছাদ আছে কিন্তু পরিত্যাক্ত। লিফটের পাশে নির্জন ও অন্ধকার একটি সুড়ঙ্গ রয়েছে, যা নিচতলা পর্যন্ত।
বীমা কোম্পানির মাঠকর্মী আবু নাসের বলেন, তার সহকর্মী লিটন সরকার সাড়ে ১২টার দিকে গ্রাহক মরিয়মের টাকা জমা দেয়। পরে বাচ্ছাটি রেখে গ্রাহক চলে যায়। কিছুক্ষণ পর লিটনও চলে যায়। পরে লিটন আবার ফিরে এসে ৩টার সময় চলে যায়। বাচ্ছটি হাঁটা-চলা করতে থাকে। কিন্তু অনেকক্ষণ পর বাচ্ছাটি কান্নাকাটি করছে দেখে আমি মোবাইল করে মরিয়মের স্বামীকে জানাই। তার স্বামী আসলে জানতে পারি নিচতলায় ওই গ্রাহকের লাশ পাওয়া গিয়েছে।
লিটন সরকার মোবাইলে মরিয়ম মারা যাওয়ার বিষয়টি সে কিছুই জানেন না বলে জানান।
রামগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর জেলা মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। পরবর্তিতে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পিডিএস/এএমকে