চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামের চিলমারী
আশ্রয়ণের ঘরে মানা হয়নি নকশা, নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে তড়িঘড়ি করে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ বরাদ্দের হরিজনপল্লীর ঘর নির্মাণ অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভূমিহীন ও গৃহহীন হরিজন সম্প্রদায়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার ও নকশা বর্হিভূতভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে। সরেজমিনের এর সত্যতা পাওয়া যায়।
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের মৌজা থানা এলাকায় ৩০টি পরিবারের জন্য হরিজনপল্লী গড়ে তোলা হচ্ছে। এতে তদারকি করছে উপজেলা প্রশাসন।
অনিয়মের অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, আমাদের কোনো বক্তব্য নেই। আমাদের কাজ শতভাগ সঠিক ভাবে হচ্ছে।
সরেজমিনের দেখা গেছে, আশ্রয়নের ১০টি ঘর নকশা বর্হিভূতভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। এতে ১৫ ইঞ্চি গাঁথুনির নির্দেশ থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। তবে বাকি ২০টি ঘরে গাঁথুনি দেওয়া হয়েছে। ঘরের প্রাথমিক ভিত্তি হিসেবে সিসি ঢালাই ৩ ইঞ্চি দেওয়ার কথা থাকলেও সেখানে দেড় থেকে ২ ইঞ্চির বেশি দেওয়া হয়নি।
জানতে চাইলে কাজের দায়িত্বে থাকা রাজমিস্ত্রি খিতিশ চন্দ্র অনিয়মের কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, নকশা দেখতে ও বুঝতে ভুল হওয়ায় প্রথম ১০টি ঘরের ১৫ ইঞ্চির গাঁথুনি দেওয়া হয়নি। আর ভিত্তির সিসি ঢালাই মাপের থেকে কম আছে। কিন্তু পরবর্তী বাকি ঘরগুলোতে নকশা অনুযায়ী করা হচ্ছে।
নিম্নমানের খোয়া ব্যবহারের অভিযোগ প্রসেঙ্গ খিতিশ চন্দ্র বলেন, সব খোয়া খারাপ না, মাঝে মাঝে দু-এক গাড়ি খারাপ খোয়া থাকলেও বেশির ভাগই ভালো খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। মূল দায়িত্বে তিনি থাকলেও হারুন নামে অপর একজন মিস্ত্রি ঘরের কাজগুলো করছেন বলে জানান তিনি।
জানতে চাইলে হারুন নামে মিস্ত্রি বলেন, প্রথমে ইস্টিমেট বুঝার ভুলের কারণে দশটি ঘরে ১৫ ইঞ্চির গাঁথুনি দেওয়া হয়নি। তবে এটার কারণে ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
ইউএনও কার্যালয় সূত্র জানা গেছে, ভূমিহীন ও গৃহহীন হরিজন সম্প্রদায়ের সদস্যদের জন্য আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের প্রতিটি ঘরের নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ সাড়ে ৮৪ হাজার টাকা। এতে ৩০টি ঘর নির্মাণে ব্যয় হবে ৮৫ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। আবাসন প্রকল্পটি ১০০ শতাংশ জমির উপর গড়ে তোলা হচ্ছে। পল্লীটিতে ১০ ফুট প্রসস্থ রাস্তা ও মূল সড়কের সঙ্গে একটি সংযোগ সড়কেরও ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।
হরিজন সম্প্রদায়ের ঘর নির্মাণে শতাংশ প্রতি ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দরে ধরে ফসলি জমি অধিগ্রহণ করে ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া ১০ শতাংশ জমি শিশুদের খেলার জন্য, ৫ শতাংশ জমিতে কমিউনিটি সেন্টার, ৮ শতাংশ জমিতে শ্মশান গড়ে তোলা হবে।