রাশেদুল ইসলাম, কক্সবাজার
কক্সবাজার পৌর নির্বাচন : স্মার্ট শহর গড়ার প্রত্যয় মাহাবুবুরের
আগামী ১২ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচন। নির্বাচনের মাঝ পথে ভোটারদের কাছে টানতে তোড়জোড় শুরু করেছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। কক্সবাজারকে স্মার্ট শহর গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী।
শনিবার (২৭ মে) কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নির্বাচনী ইশতেহারে কক্সবাজার পর্যটন শহরকে স্মার্ট পর্যটন শহর গড়ে তোলার লক্ষ্যে ৩৭টি প্রতিশ্রুতি দেন এবং নৌকা প্রতীকে সমর্থন, দোয়া ও ভোট প্রার্থনা করেন তিনি।
মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন, আমি নির্বাচিত হলে প্রতিটি পদক্ষেপই হবে শহরের উন্নয়নে। শহরবাসীর কাছে এ আমার অঙ্গীকার। হিংসা, বিদ্বেষ ও সংকীর্ণ মানসিকতা থেকে মুক্ত থাকব এবং জনগণের মধ্যে সহনশীলতা, সম্প্রীতি ও পরমতের প্রতি সম্মানজনক মানসিকতা সৃষ্টির মধ্য দিয়ে কক্সবাজার পর্যটন শহরকে একটি উন্নত শহর হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব। পরিকল্পনার মাধ্যমে অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি সেবামূলক খাতগুলো আরো শক্তিশালী করা, এক বছর, দুই বছর ও পাঁচ বছর মেয়াদি তিন স্তর বিশিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন যাত্রা শুরু করেছেন, তার সঙ্গে সংগতি রেখে স্মার্ট পর্যটন শহর ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এ নির্বাচনে তাকে নৌকায় ভোট দিয়ে মেয়র নির্বাচিত করার সবার কাছে অনুরোধ জানান।
এছাড়াও মাহাবুবুর রহমান চৌধুরীর দেওয়া প্রতিশ্রুতির মধ্যে রয়েছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে কক্সবাজার পৌরসভাকে একটি দুর্নীতিমুক্ত আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর দক্ষ পৌর প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা এবং পৌর নাগরিকদের আইনগত অধিকার সুনিশ্চিত করা হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে পৌরবাসী ও সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বয়ে যুগোপযোগী মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করা হবে এবং মাস্টারপ্ল্যান অনুসারে যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালিত হবে। শহর পারিষ্কার রাখার নিমিত্তে রাত্রীকালীন ডোর টু ডোর ক্লোজড মেথডে বর্জ্য অপসারণ করা হবে। রাস্তায় যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলাকে নিরুৎসাহিত করা হবে।
এছাড়াও শহরে সুপেয় পানি সরবরাহের লক্ষ্যে ডিস্যালাইনেশন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে পৌরবাসীর সুপেয় পানি সংকট সমাধানের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। পৌরবাসীকে নামমাত্র মূল্যে সুপেয় পানি সরবরাহ করা হবে। প্রত্যেক ধর্মের প্রতি সহনশীল নীতি অনুসরণ করা হবে এবং পৌরসভার কোনো নাগরিক যখনই মৃত্যুবরণ করবে তখনই নিজ নিজ ধর্মের নিয়ম অনুসারে সম্পূর্ণ পৌরসভার ব্যবস্থাপনায় জানাজা বা শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হবে।
মাহাবুবুর রহমান জানান, কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত উপভোগ করতে আসা পর্যটকদের জন্য ক্যাশলেস ব্যবস্থা প্রবর্তন করে পৌরসভার আয় বৃদ্ধি করা হবে, ফলে পৌরবাসী অতিরিক্ত পৌর কর থেকে পরিত্রাণ পাবে। মশা-মাছি মুক্ত নগর গড়তে কার্যকরী পরিবেশবান্ধব কীটনাশক প্রয়োগ, বদ্ধ জলাশয় ও ডোবা নিয়মিত পরিষ্কার করা হবে। যেটা এর আগে আমি কক্সবাজার পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র থাকাকালীন অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে চলমান রেখেছিলাম। অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণে নিরুৎসাহিত করা হবে। পৌরবাসীকে পরিকল্পিত বহুতল ভবন নির্মাণে সহযোগিতা ও বিনিয়োগ সহজীকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে, এতে শহরে আবাসন খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে এবং পৌর নাগরিকের সম্পদের মূল্যও বৃদ্ধি পাবে।
তিনি জানান, কক্সবাজার পৌর শিশু পার্ক স্থাপন, পৌর থিম পার্ক স্থাপন, স্বতন্ত্র নাইট বিচ মার্কেট স্থাপন, বাঁকখালী নদী সংলগ্ন জায়গায় সবুজবেষ্টনী তৈরি, কক্সবাজার স্মার্ট সিটি প্রকল্প বাস্তবায়ন, সমুদ্রে সেইফ সুইমিং নেট জোন স্থাপন, পরিবেশ ও পর্যটনবান্ধব জেটি নির্মাণ করে পৌরবাসীর বিপুল কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে। শব্দদূষণ ও যানজট নিরসন কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে। চলমান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আধুনিকায়ন, পিপিপি, বি-২ বি এবং বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে শিক্ষা খাতে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করা হবে। এছাড়াও বিদেশে অবস্থানরত সচ্ছল বিনিয়োগকারীদের সহযোগিতায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি ঐতিহ্যবাহী শিল্প স্থাপনের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনে পাঁচ মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এছাড়া ১৬ জন নারী কাউন্সলর এবং ৫৬টি সাধারণ কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করবেন। মেয়র পদে মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী নৌকা, মাসেদুল হক (রাশেদ) নারকেল গাছ, জোসনা হক মোবাইল, জগদীশ বড়ুয়া হেলমেট, জাহেদুর রহমান হাতপাকা প্রতীক নিয়ে ভোটে লড়বেন।