খালেকুজ্জামান পান্নু, পাবনা

  ২৮ মে, ২০২৩

ঘুঘুদহ বড়বিল

কচুরিপানায় অনাবাদি জমি, বিপাকে সাঁথিয়ার কৃষকরা

এলাকাবাসীর অর্থায়নে বিষ প্রয়োগ শুরু, সরকারিভাবে অর্থ বরাদ্দের দাবি

পাবনার সাঁথিয়ায় ঘুঘুদহ বড়বিলে কচুরিপানা অপসারণে শনিবার বিষ প্রয়োগ করেন কৃষকরা। ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

পাবনার সাঁথিয়ায় কচুরিপানার কারণে অনাবাদি পড়েছে আছে ঘুঘুদহ বড়বিলের প্রায় ৫০০ বিঘা কৃষিজমি। বছরের পর বছর জমি অনাবাদি থাকলেও কচুরিপানা অপসারণে সরকারিভাবে কোনো অর্থ বরাদ্দ নেই উপজেলা কৃষি বিভাগের কাছে।

এবার এলাকাবাসী উদ্যোগী হয়ে জমির কচুরিপানা অপসারণে বিষ প্রয়োগ শুরু করেছে। গত শনিবার দুপুরে স্থানীয় গৌরীগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব মাস্টারের উপস্থিতিতে কয়েকটি গ্রামের কৃষক এ বিষ প্রয়োগ করেন। কচুরিপানা অপসারণে সরকারি সহযোগিতা ও পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তারা।

কৃষকরা জানান, ঘুঘুদহ বড়বিলে প্রায় ২ হাজার ৮০০ বিঘা জমি আছে। এর মধ্যে প্রায় ৫০০ বিঘা জমি এ বছর কচুরিপানার কারণে অনাবাদি রয়েছে। তাই শত শত বিঘা জমি আবাদি করতে জমি থাকা সাপেক্ষে বিভিন্নজনের কাছ থেকে চাঁদা তুলেন এলাকার কৃষক। এদিন ২০টি বিষ প্রয়োগের স্প্রেযন্ত্রের মাধ্যমে প্রায় ১৩০ বিঘা জমিতে কচুরিপানা ও আগাছা নিধনের জন্য বিষ প্রয়োগ করা হয়। আরো ৩৭০ বিঘা জমিতে পর্যায়ক্রমে বিষ প্রয়োগ করা হবে বলেও জানান কৃষকরা। এ বিলে প্রতি বছর অনেক জমি কচুরিপানার কারণে অনাবাদি থাকে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।

ঘুঘুদহ গ্রামের কৃষক মোজাম্মেল হক জানান, ঘুঘুদহ বড়বিলে আমার আড়াই বিঘা জমির মধ্যে দুই বিঘা জমিই কচুরিপানার কারণে অনাবাদি রয়েছে। আবাদ করতে না পারায় অনেক কষ্টে সংসার চালাতে হচ্ছে। সরকারিভাবে কচুরিপানা অপসারণ করা হলে আমার মতো অনেক ক্ষুদ্র কৃষক উপকৃত হবেন।

কৃষক মনসুর আলম জানান, আমার মতো অনেক কৃষকের এ বিলে অনাবাদি জমি রয়েছে। এত জমির কচুরিপানা নিজেদের উদ্যোগে অপসারণ করা সম্ভব নয়। তাই সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কৃষকের অনাবাদি জমি আবাদে পরিণত করতে জোড় দাবি জানাই।

এ বিষয়ে গৌরীগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব মাস্টার বলেন, ঘুঘুদহ বড়বিলের অনাবাদি জমির কচুরিপানা ও আগাছা নিধনের জন্য কৃষকদের উদ্যোগে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে। এ কাজের উদ্বোধন করতে আমাকে অতিথি করায় কৃষকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা যাবে না, সেজন্য কৃষকদের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।

সাঁথিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সঞ্জীব কুমার গোস্বামী বলেন, কচুরিপানা অপসারণের জন্য ওই এলাকার কৃষক আমার দপ্তরে এসেছিলেন। তাদেরকে বলা হয়েছে, কচুরিপানা অপসারণের জন্য সরকারিভাবে কোনো অর্থ বরাদ্দ নেই। কৃষকদের ব্যক্তিগত ও সমন্বিতভাবে কচুরিপানা পরিষ্কার করতে হবে। তবে তারা নিজ উদ্যোগে কাজটা শুরু করায় ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এছাড়া সরকারিভাবে অপসারণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করব।

পিডিএস/মীর

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সাঁথিয়া,অনাবাদি জমি,কচুরিপানা,ঘুঘুদহ বড়বিল
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close