ফসিয়ার রহমান, পাইকগাছা (খুলনা)

  ২৪ মে, ২০২৩

পাইকগাছা মন্দিরের কর্তৃত্ব নিয়ে বিরোধ, পাল্টাপাল্টি হামলা-মামলা

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

খুলনার পাইকগাছায় মন্দিরের কর্তৃত্ব নিয়ে বিরোধে জড়িয়ে পড়েছেন রাড়ুলী দক্ষিণপাড়া গ্রামের ধর্মাবলম্বী শতাধিক পরিবার। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে হামলা-মামলার ঘটনাও ঘটেছে। ইতিমধ্যে প্রশাসন, থানা-পুলিশ ও পূজা উদযাপন পরিষদের বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টা করলেও কোনো চেষ্টায় সফল হয়নি।

সর্বশেষ ৫ মে হামলার ঘটনায় দুই পক্ষের মধ্যে মামলা হয়। এ ঘটনার জেরে শিবপদের পক্ষ থেকে লুটপাটের মামলা দিয়ে বিকাশ পক্ষের লোকদের হয়রানি করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকার লোকজন। এ বিরোধ নিষ্পত্তি করতে না পারলে দুই পক্ষের মধ্যে পুনরায় ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

জানা যায়, উপজেলার রাড়ুলী ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া সার্বজনীন পূজা মন্দিরের কর্তৃত্ব নিয়ে দুটি পক্ষ হয়েছে। মন্দিরের আওতায় এলাকায় ৮৭ পরিবার সনাতন ধর্মের মানুষ বসবাস করে। মন্দিরটির দীর্ঘদিন সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিল শিবপদ সরকার। শিবপদ-সত্যনন্দ গংদের পক্ষে রয়েছে ২২ পরিবার। অন্যদিকে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে মন্দিরের কর্তৃত্ব রয়েছে বিকাশ-পার্থ সরকার গংদের। তাদের রয়েছে ৬৫ পরিবার।

ফসলি জমি ও পুকুরসহ মন্দিরের বেশ কিছু সম্পত্তি রয়েছে। যার কর্তৃত্ব নিয়ে বেশ অনেক দিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। বিরোধের কারণে বহু পরিবার মন্দিরে শান্তিপূর্ণভাবে পূজা-অর্চনা করতে পারে না। থানা-পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে একাধিক সালিসি বৈঠক হলেও এখনো পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ কোনো সমাধান হয়নি।

মন্দির কমিটির সাবেক সম্পাদক দিলিপ সরকার জানান, সেপ্টেম্বর ২০২২ থেকে মন্দিরের কর্তৃত্ব আমাদের। শিবপদ গংরা আমাদের ওপর হামলা করে। তাদের অনুসারী সন্ধ্যা রানী সরদার লুটপাট মামলা দিয়ে আমাদের হয়রানি করার ষড়যন্ত্র করছে বলে জানতে পেরেছি। এ ধরনের হয়রানি বন্ধ না হলে এলাকা থেকে চলে যাওয়া ছাড়া আমাদের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে।

সন্ধ্যা রানীর প্রতিবেশী গণেশ সরকার জানান, আমরা তার পাশেই বাস করি, কিন্তু ঘটনার দিন রাতে এমন কোনো কিছু টের পায়নি। দুখীরাম জানান, লুটপাট হলে শব্দ হয়, চিল্লাচিল্লি হয়, তেমন কিছুই আমরা শুনতে পায়নি।

ক্যাম্প ইনচার্জ ইমরান হোসেন জানান, সোমবার বেলা ১১টায় ৯৯৯ ফোনের ভিত্তিতে আমি সন্ধ্যা রানীর বাড়িতে যাই। তিনি অভিযোগ করেন, ২১ মে রাত ২টার দিকে ভয় দেখিয়ে তাকে জিম্মি করে ৪০ মণ ধান ও স্বর্ণালংকারসহ তার বাড়ি থেকে বিভিন্ন মালামাল লুটপাট করা হয়েছে। বিষয়টি পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত করে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে প্রাথমিক তদন্তে সন্ধ্যা রানীর অভিযোগ এবং তার কথার মধ্যে কিছুটা গরমিল রয়েছে। তদন্ত শেষ হলে বিষয়টি পরিষ্কার হওয়া যাবে।

এ ধরনের হয়রানি বন্ধ ও বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদসহ সর্বমহলের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
খুলনা,পাইকগাছা,মন্দিরের কর্তৃত্ব
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close