সিংগাইর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি

  ২২ মে, ২০২৩

সিংগাইরে সবজি চাষে সফল আজিজ

সিংগাইর উপজেলার বায়রা ইউনিয়নের চারাভাঙ্গা এলাকায় চিচিঙ্গাখেত পরিচর্যা করছেন কৃষক আজিজ ও তার স্ত্রী। ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

মানিকগঞ্জের সিংগাইরে মালচিং পদ্ধতিতে নিরাপদ সবজি চাষ করে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন আবদুল আজিজ। তিনি উপজেলার বায়রা ইউনিয়নের চারাভাঙ্গা এলাকার জনাব আলীর ছেলে। আজিজ পরিবারের হাল ধরতে অল্প বয়সেই শ্রমিক ভিসায় সৌদি আরব পাড়ি জমান। সেখানে দীর্ঘদিন চাকরি করেন। তেমন সুযোগ-সুবিধা করতে না পেরে দেশে ফেরেন। দেশে এসে অল্প কিছু জমি ইজারা নিয়ে সবজি চাষ শুরু করেন। কিন্তু অজ্ঞতার কারণে তেমন লাভবান হতে পারেননি তিনি। এরই মধ্য ওয়েভ ফাউন্ডেশনের কৃষি ইউনিটের কৃষি কর্মকর্তা মো. রাকিবুল হাসান ও সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ হয় তার। জানতে পারেন নিরাপদ ফসল উৎপাদনের বিভিন্ন প্রযুক্তি মালচিং পেপার, ফেরোমন ফাঁদ, রঙিন আঠালো ফাঁদ সম্পর্কে। কৃষিকাজের বিভিন্ন পরামর্শ নেন তিনি। একপর্যায়ে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) সমন্বিত কৃষি ইউনিটের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় এবং ওয়েভ ফাউন্ডেশনের বাস্তবায়নে ওই এলাকায় নতুন করে মালচিং পদ্ধতিতে নিরাপদ সবজি হিসেবে চিচিঙ্গা চাষ শুরু করেন। এতে তিন মাসের মধ্য ভালো ফলন হওয়ায় সবজি চাষে আরো আগ্রহ বাড়ে তার। পর্যায়ক্রমে তিনি ১৮ বিঘা জমি লিজ নিয়ে শসা, ধুন্দল, করলা ও চিচিঙ্গা চাষ শুরু করেন। এ থেকে এক বছরে সব খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ১০ লাখ টাকা আয় করেন তিনি।

কৃষক আবদুল আজিজের চাষাবাদ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে অত্র এলাকার অন্য কৃষকরা মালচিং পেপার ব্যবহার করে নিরাপদ সবজি উৎপাদন শুরু করেছেন।

অন্যদিকে, উদ্যোক্তা পর্যায় উপজেলার ঘোনাপাড়া এলাকার কৃষক দেওয়ান মো. সায়েম উচ্চমূল্যের ফল বারি মাল্টা-১ ও গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ, বায়রা কাশিম নগরের তপন কুমার সরকার কোকোডাস্ট মিডিয়া ব্যবহার করে মানসম্পন্ন সবজি ও ফলের চারা উৎপাদন ও বিপণন, চর জামালপুর এলাকার মো. সুজন বেপারি ভার্মি কম্পোস্ট (কেঁচোসার) উৎপাদন ও বাজার জাতকরণে লাভের আশায় বুক বাঁধছেন।

কৃষক আজিজ বলেন, আমি পরিবারের হাল ধরতে সৌদি আরব যাই। সেখানে দীর্ঘদিন থেকেও তেমন সুযোগ-সুবিধা করতে পারিনি। পরে দেশে এসে সবজি চাষ শুরু করি। তাতেও তেমন লাভবান হতে পারিনি। এতে হতাশ হয়ে পড়ি। এরই মধ্য সমন্বিত কৃষি ইউনিটের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। তাদের পরামর্শ আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা মালচিং পদ্ধতিতে নিরাপদ সবজি চাষ শুরু করি। এতে ভালো লাভবান হই। পরে ১৮ বিঘা জমি লিজ নিয়ে সবজি চাষ ও বাজারজাত করে ১ বছরে প্রায় ১০ লাখ টাকা আয় করেছি। এখন আমি পরিবার নিয়ে অনেক ভালো আছি।

সমন্বিত কৃষি ইউনিটের কৃষি কর্মকর্তা মো. রাকিবুল হাসান জানান, নিরাপদ ফসল উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের জন্য সমন্বিত কৃষি ইউনিট (পিকেএসএফ) মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকি। যাতে উদ্যোক্তারাও স্বাবলম্বী হতে পারেন। অন্যদিকে, যাতে ভোক্তাদের কাছে নিরাপদ সবজি পৌঁছায়। এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য।

উপজেলা কৃষি সম্প্রাসরণ কর্মকর্তা সুরাইয়া নিশাত জানান, সমন্বিত কৃষি ইউনিটের (পিকেএসএফ) কার্যক্রম সম্পর্কে আমরা অবগত। এ বছর উপজেলা ১২৫ হেক্টর জমিতে চিচিঙ্গা চাষ হয়েছে। কৃষকরা দামও পাচ্ছেন ভালো। তিনি আরো বলেন, কৃষকদের আমরাও প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে থাকি।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সিংগাইর,সবজি  চাষ,আজিজ
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close