সাবেক শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এমপি বলেছেন, বর্তমানে টাকার অভাবে কোনো মানুষ বিচার থেকে বঞ্চিত হয় না। সাধারণ মানুষেরা সরকারিভাবেই এই সহায়তা পেয়ে থাকেন।

বুধবার (২৯ মার্চ) ভোলায় জেলা লিগ্যাল এইড কমিটি আয়োজিত ২০২২ সালে সরকারি আইন সহায়তা কার্যক্রমে অনন্য অবদানের জন্য উপজেলা ও ইউনিয়ন লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যানবৃন্দের সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, গরীব, দরিদ্র মানুষের বিচার নিশ্চিত করতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা প্রথমবার ক্ষমতায় এসেই উদ্যোগ নেন। আমি তখন শিল্প ও বানিজ্যমন্ত্রী ছিলাম। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে এই বিষয়টিকে তিনি আরো সম্প্রসারণ করে এ সংক্রান্ত বিধি প্রণয়ন করে বিপুল সংখ্যাক মানুষকে এই আইনি সেবার আওতায় এনেছেন। বর্তমানে টাকার অভাবে কোনো মানুষ বিচার থেকে বঞ্চিত হয় না। তিনি এই কার্যক্রমের উত্তোরাত্তোর সাফল্য কামনা করেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ভোলার জেলা ও দায়রা জজ এবং জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির সম্মানিত চেয়ারম্যান মো. মহসিনুল হক বলেন, আমরা আমাদের বাংলাদেশের অস্থিত্ব রক্ষা করতে চাই। আমরা এই দেশটাকে ভিষণভাবে ভালোবাসি, আমরা এই দেশটাকে কখনো ছেড়ে যাবো না। এই দেশটা উন্নয়নের মহাসড়কে দাঁড়িয়ে গেছে। এই উন্নয়নের ট্রেন যাত্রা চলমান রাখতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা রূপকল্প ২০৪১ সালের যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেন সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হলে আমাদের আগামী প্রজন্ম সুখে-শান্তিতে থাকতে পারবে।

এ সময় তিনি আরো বলেন, চেয়ারম্যানরা আমাদের অনেক কাজ সহজ করে দিয়েছেন। যে কারণে দেশে ৩৫ লাখের বেশি মামলা বাড়তে পারেনি। মামলা না বাড়ায় ভোলায় ২২ লাখ মানুষের বসবাস। এখানে লক্ষাধিক মামলা হতো। ভোলার গ্রাম আদালতের মাধ্যমে এখানে অনেক মামলা চেয়ারম্যানরা নিষ্পত্তি করে দেন। তাই আমাদের বিচারিক কার্যক্রমকে সহজ করে দিয়েছেন তারা।

ভোলার ৭০ ইউনিয়নের ৭০ জন ইউপি চেয়ারম্যান এবং সাতজন উপজেলা চেয়ারম্যানকে সংবর্ধিত করার মধ্যে দিয়ে ভোলায় জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির কার্যক্রম অনন্য মাত্রায় পৌঁছালো। বাংলাদেশে এই প্রথম কোনো জেলায় এই ধরনের সংবর্ধনা প্রদানের আয়োজন করা হয়েছে। সংবর্ধিত অতিথিদেরকে জেলা লিগ্যাল এই কমিটির পক্ষ থেকে একটি সম্মাননা ক্রেস্ট, পবিত্র কোরআন শরীফ এবং জেলা লিগ্যাল এই কমিটি কর্তৃক প্রকাশিত ‘সেবার ডাক’ গ্রন্থ তুলে দেয়া হয়।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ আবদুল মমিন টুলু, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন টাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক নুরুল আলম মো. নিপু, ভোলা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরীফ মো. সানাউল হক, ভোলার পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম বিপিএম, পিপিএম, জিপি অ্যাডভোকেট নুরুল আমিন নুরনবী, পিপি অ্যাডভোকেট সৈয়দ আশরাফ হোসেন লাবু, ভোলা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইফতারুল হাসান শরীফ, লালমোহন উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মো. গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, তজুমদ্দিন উপজেলা চেয়ারম্যান মোশারেফ হোসেন দুলাল, দৌলতখান উপজেলা চেয়ারম্যান মনঞ্জুরুল আলম খান, ভোলার বাপ্তা ইউপি চেয়ারম্যান ইয়ানুর রহমান বিপ্লব মোল্লা, চরকুকরি মুকরির ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসেম মহাজন, ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন হায়দার প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন, জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা সাব্বির মো. খলিদ।

সভাপতির বক্তব্যে ভোলার জেলা ও দায়রা জজ মো. মহসিনুল হক বলেন, ভোলার ইউপি চেয়ারম্যানগণ তাদের নিজেদের গ্রাম্য আদালতে সুন্দরভাবে বিচার করায় বেশীরভাগ মানুষ উপকৃত হচ্ছে। তাতে ২২ লক্ষ্যের জনসংখ্যার ভোলা জেলায় বিচার বিভাগে মামলার জট বাড়ছে না।

উল্লেখ্য, গত ১ বছরে ভোলায় লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে ৪ হাজার ৪শ ৯৮ জন বিচারপ্রার্থী আইনি সহায়তা পেয়েছেন। আগামী দিনে আরো ব্যাপকভাবে এই কার্যক্রকে সম্প্রসারণ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত উপজেলা ও ইউপি চেয়ারম্যানগণ।

পিডিএস/এএমকে