রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

  ২২ মার্চ, ২০২৩

মিষ্টি কুমড়ায় ভরে গেছে তিস্তার চর 

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

কুড়িগ্রামের রাজারহাটে তিস্তার চরে বালুমাটিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করে ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছন অনেক কৃষক। যেদিকে চোখ যায় শুধু বালু আর বালু। উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ও বিদ্যানন্দ ইউপিতে অবস্থিত তিস্তা নদীর চরগুলোই এখন বাসিন্দাদের জন্য আশীর্বাদ বয়ে আনছে। বিভিন্ন ধরনের ফসলে ভরে গেছে চরের একরের পর একর জমি। এই মৌসুমে বিশেষ করে মিষ্টি কুমড়ার ফলন আশা জুগিয়েছে কৃষকের মনে। শত কষ্ট উপেক্ষা করে সামনের দিকেই নজর তাদের।

বিদ্যানন্দ চরের কয়েকজন কৃষক হাসিমুখে বলেন, চরের বালুতে যখন ফসল ফলিয়ে ভালো দাম পাই তখন আর কষ্ট থাকে না। তবে সরকরি সাহায্য সহযোগিতা না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে উপজেলার তিস্তার চরে প্রায় ৩২০ হেক্টর জমিতে চলতি মৌসুমে মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয়েছে।

উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের রতি মৌজার কৃষক ছকির উদ্দিন বলেন, মাচার কোনো প্রয়োজন হয় না। বালুতে কুমড়া চারাগুলো বিচরণ করে সামান্য খড় বিছিয়ে দিলেই হয়। এজন্য খরচ কম, উৎপাদন ও ভালো হয়। কম খরচে অধিক লাভ করতে চরাঞ্চলের বালুমাটিতে মিষ্টি কুমড়ার বিকল্প নেই। এ ছাড়া বাদাম, পেঁয়াজ, রসুন, ভুট্টা, আলু ও মরিচের কদরও বেশ। যদি আগাম কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না আসে তাহলে লাভের আশা সবার। বন্যা আর ভাঙনের স্বীকার সহায়-সম্পদহীন মানুষগুলো জীবন-জীবিকার তাগিদে জেগে ওঠা বালুচরের বুকেই আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের বিশ্বাস, এখান থেকেই ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।

কৃষক আবু তাহের ও রহিমুদ্দিগন জানান, বালুচরে গর্ত করে বালু সরিয়ে সেই গর্তে অন্য জায়গা থেকে আনা পলিমাটি দিয়ে গর্ত পূরণ করে দেওয়া হয়। প্রতিটি গর্তে জৈব সার দিয়ে মিশ্রণ করে তিন থেকে চারটি করে মিষ্টি কুমড়ার বীজ রোপণ করতে হয়। এর চারাগাছ বড় হলে পানিসেচ আর একটু পরিচর্যা করলে ফুল-ফল আসতে শুরু করে। প্রতিটি গাছে প্রায় আট থেকে নয়টি করে কুমড়া ধরে তার ওজন চার থেকে পাঁচ কেজি করে হয়। প্রতিটি কমড়া ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়।

রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চর তৈয়ব খাঁ গ্রামের কৃষক আশেদুুল ইসলাম জানান, তার নিজের কোনো জমি নেই। তাই চরে জেগে ওঠা জমিতে প্রায় পাঁচ শ কুমড়ার চারা লাগিয়েছেন। এতে ১৩ হাজার টাকা খরচে এ খেত থেকে প্রায় ৪০ হাজার টাকার মিষ্টি কুমড়া বিক্রি করার আশা করছেন।

শিয়াল খাওয়ার চরের রফিকুল ইসলাম বলেন, নদীতে সব জমি ভেঙে গেছে। একটা লাউগাছ লাগানোর মতো জমি নেই। চরে বালুময় জমিতে গর্ত খুঁড়ে প্রায় ১৯০টি মিষ্টি কুমড়ার চারা লাগিয়েছি। দূর থেকে পাইপে করে পানিসেচ দিয়ে দিতে হয়। প্রতিটি গাছে আট থেকে নয়টি করে মিষ্টি কুমড়া এসেছে। আশা করছি লাভের মুখ দেখব।

রাজারহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুন্নাহার সাথী জানান তিস্তার চরের কৃষকদের যদি প্রণোদনার আওতায় আনা যায় তাহলে তারা আরো স্বাবলম্বী হবে।

পিডিএসও/এম

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
রাজারহাট,মিষ্টি কুমড়া,তিস্তার চর
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close