চট্টগ্রামে এক চিকিৎসককে ধর্ষণচেষ্টা মামলায় মো. জামসেদ (৩৫) নামের অটোরিকশা চালককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। এছাড়া একই আদেশে ওই আসামিকে ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ডও করা হয়। রবিবার (১৯ মার্চ) চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরার আদালত এ রায় দেন। রায়ের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আসামি জামসেদ নোয়াখালী জেলার হাতিয়া থানার গুল্লাখালী ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মো. সাইদুল হক চৌধুরী ছেলে।

আদালতের নথি থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালে ২৪ মার্চ জিইসি স্যানমার সামনে থেকে নগরীর টেক্সটাইল গেট যাওয়ার জন্য সিএনজি অটোরিকশায় উঠেন ওই চিকিৎসক। অটোরিকশা দুই নম্বর গেট দিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও যানজটের কথা বলে মুরাদপুর মোড় দিয়ে টেক্সটাইল পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানান চালক। মুরাদপুরের রাস্তা দিয়ে না গিয়ে বন গবেষণাগারের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় নিষেধ করেন ওই নারী। তবে অটোরিকশা চালক না থামিয়ে দ্রুত বন গবেষণাগারের পশ্চিম পাহাড়ের নির্জন জায়গায় নিয়ে যান। সেখানে সিএনজি অটোরিকশা থামিয়ে জোরপূর্বক ওই চিকিৎসককে নামানো হয়। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ওড়না পেঁচিয়ে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালান চালক। চিকিৎসকের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করেন। এ সময় অটোরিকশা চালক জামশেদ পালানোর চেষ্টা করলে তাকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। ধস্তাধস্তির কারণে চিকিৎসকের বাম পায়ের পাতা, হাঁটু ও দুই হাতে জখম হয়। এ ঘটনায় ওই চিকিৎসক বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। ২০১৬ সালের ৯ জুন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জ গঠন করা হয়। মামলায় আদালতে ৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর স্পেশাল পিপি এমএ নাসের চৌধুরী বলেন, এক নারী চিকিৎসককে ধর্ষণের চেষ্টায় সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে সিএনজি অটোরিকশা চালক মো. জামসেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় একটি ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে ২ বছর কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। অন্য একটি ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তার ১০ বছর কারাদণ্ড, ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে ১ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. জামসেদকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।