মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে লাউয়াছড়া বনে ডরমেটরি লেকের উত্তর পশ্চিম ও হিড বাংলাদেশের পশ্চিমে শনিবার (১৮ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ আগুন লাগে। এলাকাবাসী ও বন কর্মীরা প্রায় দেড় ঘণ্টার প্রচেষ্টায় রাত ৮টার দিকে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক অবস্থায় ধারণা করা হচ্ছে, আগুনে প্রায় এক একর জায়গা পুড়ে গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লাউয়াছড়া বনের বাঘমারা ক্যাম্পের অধীনে বন বিভাগের স্টুডেন্ট ডরমেটরির উত্তর পশ্চিম ও হিড বাংলাদেশের পশ্চিমে সন্ধ্যায় হঠাৎ আগুন দেখা যায়। আগুন প্রায় এক একর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দা ও বন কর্মীরা দ্রুত এগিয়ে এসে আগুন নেভানোর কাজে লেগে যান।

বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, কিছুদিন আগে বনের বাঁশ ও বেত কাটার কারণে বন বিভাগের পক্ষ থেকে কিছু দুষ্কৃতকারীদের ওপর মামলা করা হয়। হয়তো তারা ক্ষুব্ধ হয়ে সন্ধ্যায় বনের ওই জায়গায় আগুন লাগিয়েছে। এলাকার বাসিন্দারা বলেন, বনে কীভাবে আগুন লেগেছে এ বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। সন্ধ্যায় হঠাৎ আগুন দেখে আমরা নেভানোর জন্য এগিয়ে যাই।

কমলগঞ্জ জীব বৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আহাদ মিয়া বলেন, এর আগেও গত বছর লাউয়াছড়া বনে আগুন লাগানো হয়েছিল। এবারও আগুন লাগানো হয়েছে। আগুনে বনের প্রাণী ও পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়।

লাউয়াছড়া বন রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, কীভাবে আগুন লেগেছে সে বিষয়ে জানি না। হয়তো সিগারেটের আগুন থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে অথবা দুষ্কৃতকারীরা পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগিয়েছে। বনের কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা তদন্ত করে বলতে হবে।

এ বিষয়ে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের মৌলভীবাজারের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, লাউয়াছড়া রেঞ্জের অধীনে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। সম্প্রতি বনের বাঁশ কাটার জন্য কিছু দুষ্কৃতকারীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। হয়তো তারা বনে বিচ্ছিন্নভাবে আগুন লাগিয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি বনের প্রায় এক একর জায়গা পুড়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

এর আগে ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে বনে আগুন লেগে প্রায় তিন একর জায়গা পুড়ে যায়।

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে ৪৬০ প্রজাতির দুর্লভ উদ্ভিদ ও প্রাণী রয়েছে। এর মধ্যে ১৬৭ প্রজাতির উদ্ভিদ, ৪ প্রজাতির উভচর, ৬ প্রজাতির সরীসৃপ, ২৪৬ প্রজাতির পাখি এবং ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী দেখা যায় বলে জানা গেছে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ থেকে।

পিডিএস/এএমকে/কেএমএস