বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

  ১৭ মার্চ, ২০২৩

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের অনুষ্ঠান

বাউফলে পুলিশের গুলিতে সাংবাদিকসহ আহত ২০ 

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

পটুয়াখালীর বাউফলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবস উদ্্যাপনকে কেন্দ্র করে পুলিশ, উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ লাঠিচার্জ ও ২০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষের ঘটনায় উপজেলা চেয়ারম্যান, পুলিশ ও সাংবাদিকসহ প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন।

শুক্রবার (১৭ মার্চ) বেলা সোয়া ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটকের সামনের সড়কে ওই ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ১১টার দিকে পৌর শহরের মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠ থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদার একটি শোভাযাত্রা নিয়ে উপজেলা পরিষদের সামনে আসেন। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় জনতা ভবন থেকে স্থানীয় এমপি আ. স. ম. ফিরোজের অনুসারীরা শোভাযাত্রা বের করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন দু’পক্ষের সংঘাত এড়াতে উপজেলা চেয়ারম্যানকে তার শোভাযাত্রাটি দলীয় কার্যালয় জনতা ভবনের দিকে না গিয়ে উপজেলা চত্বরে অবস্থানের অনুরোধ করেন। তা সত্ত্বেও শোভাযাত্রাকারীরা জোর করে অগ্রসর হলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এতে তারা পুলিশের ওপর চড়াও হয়। একপর্যায়ে পুলিশ তাদের ধাওয়া করলে উপজেলা চেয়ারম্যানের সমর্থকরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। তাদের ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ফেস্টুনের সঙ্গে থাকা লাঠির আঘাতে ওসিসহ ৯ পুলিশ আহত হয়। পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্জ, পরে শর্টগানের ২০ রাউন্ড গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে। কিন্তু পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার অনুসারীরা উপজেলা পরিষদ গেট থেকে জনতা ভবনের দিকে এগিয়ে গেলে স্থানীয় এমপি আ. স. ম. ফিরোজের অনুসারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে উপজেলা চেয়ারম্যানসহ উভয় পক্ষের প্রায় ২০ জন এবং এক সাংবাদিক আহত হন। এরপর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আল আমিন এবং ওসি আল মামুনসহ পুলিশের একটি দল রাস্তায় টহল দিয়ে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ তাদের নিয়ন্ত্রণে নেন।

বাউফল থানার ওসি মো. আল মামুন জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. প্রশান্ত কুমার সাহা জানান, উপজেলা চেয়ারম্যানের বুকে এবং আঙুলে কাটা দাগ রয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের শোভাযাত্রায় অংশ নিতে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে প্রায় ২০ হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থক উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় জনতা ভবনে সমবেত হন। প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে বেলা সাড়ে ১১টায় শোভাযাত্রাটি বের করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে উপজেলা চেয়ারম্যান এই সংঘাতের সৃষ্টি করেছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় জনতা ভবন থেকে সমবেত নেতাকর্মীদের নিয়ে দুপুর ১২টার দিকে এমপি আ. স. ম. ফিরোজের নেতৃত্বে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে পাবলিক মাঠ পর্যন্ত গিয়ে জনতা ভবনে গিয়ে শেষ হয়।

শোভাযাত্রার প্রাক্কালে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে আ. স. ম. ফিরোজ বলেন, যারা কোনোদিন জয়বাংলা স্লোগান দেয়নি, যারা বঙ্গবন্ধু এবং প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটুক্তি করে, তাদেরকে নিয়ে একটি চক্র আওয়ামী লীগের পূর্বনির্ধারিত শোভাযাত্রায় অংশ নিতে আসা নেতাকর্মীদের উপর হামলা করেছে। তিনি ওই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। এ সময় তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ শান্তিপ্রিয় এবং মানুষের ভালবাসার দল। স্থানীয় রাজনীতিতে দুষ্টলোকের কোনো ষড়যন্ত্রই সফল হবে না।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বাউফল,বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন,পুলিশের গুলি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close