ফরিদপুর প্রতিনিধি :

  ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

ফরিদপুরে স্ত্রী তালাক দেয়ায় বিষপানে স্বামীর আত্মহত্যা

ছবি : সংগৃহীত।

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় স্ত্রী তালাক দেয়ার খবর শুনে শ্বশুরবাড়ির উঠানে দাঁড়িয়ে বিষপানে এক স্বামী আত্মহত্যা করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

আত্মহত্যাকারী ব্যক্তির নাম নাজমুল মাতুব্বর। তিনি ঘারুয়া ইউনিয়নের বিবিরকান্দা গ্রামের প্রবাসী ইলিয়াছ মাতুব্বরের ছেলে।

এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে স্বামী বিষপানে গুরুত্বর আহত হন। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য পরবর্তীতে তাকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বুধবার দুপুরে সে মারা যায়। ফরিদপুর কোতয়ালী থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করেছে।

স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের বিবিরকান্দা গ্রামের ইলিয়াছ মাতুব্বরের ছেলে নাজমুলের সঙ্গে চার বছর আগে চুমুরদী ইউনিয়নের পুর্ব সদরদী গ্রামের হাসমত সিকদারের মেয়ে কনিকার বিবাহ হয়। বিবাহর পর নাজমুল শ্বশুর বাড়ি এলাকা ও নিজ বাড়ির এলাকায় বেশ কয়েকটি মেয়ের সঙ্গে পরোকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। স্ত্রী মনিকাসহ উভয় পরিবারের লোকজন তাকে বোঝানো সত্ত্বেও সে পরাকীয়া থেকে ফিরে আসে না। এক পর্যায় মনিকা গত ২০ ফেব্রুয়ারি স্বামী নাজমুলকে লিখিতভাবে তালাক দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নাজমুল বিষের বোতল হাতে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে উঠানে দাঁড়িয়ে বিষ পান করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা প্রদান করে। রাতে তার অবস্থা খারাপ হলে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

স্ত্রী মনিকা জানান, আমার স্বামীর সঙ্গে চার বছর আগে আমার বিবাহ হয়েছে। বিবাহর পর থেকেই তার বাইরের মেয়েদের প্রতি টান ছিল। আমি ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে অনেক বোঝাতে চেষ্টা করেও তাকে ওইপথ থেকে ফেরাতে পারিনি। বাধ্য হয়ে দুই দিন আগে আমি তাকে তালাক দিয়েছি। তালাকের পর সে আমাকে ফোনে হুমকি দিয়েছিল যে আমি তোর বাড়ির উঠানে বিষপান করে আত্মহত্যা করে তোকে দেখিয়ে দেব। বিষয়টি আমি আমার পরিবার ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে জানিয়েছি। হঠাৎ কাল দুপুরে আমাদের বাড়ির উঠানে এসে সে এই কাজটি করে।

এ ব্যাপারে নিহত নাজমুলের বাবা ইলিয়াছ মাতুব্বর বলেন, উভয় পরিবারের মধ্যে ইতোমধ্যে একাধিকবার দরবার শালিস হয়েছে। ছেলে বিষ খেয়েছে সংবাদ শুনে তাকে নিয়ে চিকিৎসায় ছিলাম। বিষপানের এক দিনের মাথায় সে মারা গেছে।

এর সত্যতা নিশ্চিত করে চুমুরদী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নাসিম শিকদার মিলন বলেন, নাজমুলের পরিবার ও মনিকার পরিবারকে নিয়ে একাধিকবার দরবার শালিস করা হয়। নাজমুল উভয় পরিবারকে জিম্মি করে তার খেয়াল খুশি মতো বেপরোয়া চলাচল করত।

পিডিএস/এএমকে

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আত্মহত্যা,বিষপান,ফরিদপুর
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close