বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
সাগরে ট্রলার ডাকাতি চার জলদস্যু গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে র্যাবের অভিযানে ৪ জলদস্যু আটক হয়েছে। র্যাবের ভাষ্য, আটককৃতরা সম্প্রতি বরগুনা পাথরঘাটার গভীর বঙ্গোপসাগরে জেলেদের ট্রলারে ডাকাতির ঘটনায় যুক্ত ছিল। এরা হলেন, বাঁশখালী গন্ডামারা ইউনিয়নের পশ্চিম বড়ঘোনা এলাকার আলী আহমেদ পুত্র মোঃ কাইছার (২৫), পূর্ব বড়ঘোনা এলাকার মৃত আহমদ ছফার পুত্র মোঃ জাহিদ (২৫), পশ্চিম বড়ঘোনা এলাকার মৃত আলী চান এর পুত্র মোঃ সেলিম (৪০) ও একই এলাকার মোঃ সেলিমের পুত্র মোঃ ইকবাল (১৫)। এর মধ্যে মোঃ কাইছার (কালু) এর কাছ থেকে বরগুনার বোট হতে ডাকাতিকৃত ১টি মোবাইল ফোন পাওয়া গেছে। পরে তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে জানা গেছে, উদ্ধারকৃত মোবাইলটি আব্দুল করিম নামক দস্যুতার কবলে পরা ভিকটিম জেলের। আটককৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জলদস্যুতার সাথে তাদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। তাদের দেখিয়ে দেওয়া স্থান হতে ৪টি দেশিয় আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ, ২টি হাতুড়ি, ৩টি দা, ১টি কিরিচ, ২টি শাবল, জাল এবং দস্যুতাবৃত্তিতে ব্যবহৃত বোট ও অন্যান্য আলামত উদ্ধার করা হয়। র্যাব জানায়, ইতোপূর্বে আটককৃতরা চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার বাঁশখালী, পেকুয়া, মগনামা এবং কুতুবদিয়া এলাকার উপকূলীয় অঞ্চলে ডাকাতি করত। তারা বর্তমানে ওই এলাকা ছেড়ে বরিশাল, বরগুনা এবং খুলনা উপকূলীয় অঞ্চলে অবস্থান করে ডাকাতি শুরু করেছে।
জানা গেছে, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সোমবার পাথরঘাটা থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বঙ্গোপসাগরে একটি দ্রুতগামী বোটে করে ২৫-৩০ জনের একটি জলদস্যু দল এক জেলেদের ট্রলারে ডাকাতি শুরু করে। এসময় জলদস্যুরা ট্রলারের ১৮ জেলেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। প্রাণ বাঁচতে ৯ জেলে গভীর সাগরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। পরে অন্য একটি ট্রলারের জেলেরা আহত ওই ৯ জন জেলেকে উদ্ধার করে শনিবার সন্ধ্যায় পাথরঘাটায় নিয়ে আসে। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত দুজনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এদিকে, প্রাণ বাঁচতে বঙ্গোপসাগরে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ ৯ জনের ৪ জনকে সাগর থেকে উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়। এখনও ৫ জেলে নিখোঁজ।
র্যাব জানায়, জলদস্যু ও ডাকাত দলকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য র্যাব-৭, র্যাব-৮, র্যাব-১৫ এবং র্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা যৌথভাবে কাজ শুরু করে। এরই প্রেক্ষিতে ২১ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে যৌথ আভিযানিক দল বাশখালী উপজেলার গন্ডামারা, বড়ঘোনা, বাংলাবাজার, শীলকূপ সহ তৎসংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এদের গ্রেপ্তার করা হয়।