বলরাম দাশ অনুপম, কক্সবাজার

  ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

সিন্ডিকেটের কবলে লবণ শিল্প, হতাশ পেকুয়ার চাষীরা

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

হঠাৎ লবণের দরপতনে বিপাকে পড়েছেন লবণ চাষিরা। একই সঙ্গে বেশি দামে লবণ ক্রয় করে কম দামে বিক্রি করায় লোকসানে ব্যবসায়ীরাও। আচমকা প্রতি মণে ৬০০ টাকা থেকে নেমে গেছে ২৩০ টাকায়। সিন্ডিকেটের কারণে লবণ শিল্পের এ অবস্থা বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

চলতি বছরে উপজেলার দ্বিতীয় আয়ের প্রধান উৎস লবণের দামে ছিল বেশ চাঙা। মণপ্রতি ৫৫০ টাকা থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হতো। চাষের শুরু থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত চাষিরা মাঠে লবণের দাম পেত ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা। চড়া দামে জমির লাগিয়ত মূল্য, শ্রমিক ও পলিথিন খরচ বাড়লেও দামে খুশি ছিল চাষিরা। তবে হঠাৎ দরপতনে লোকসানে পড়তে হয়েছে চাষি-ব্যবসায়িদের।

মগনামা ইউনিয়নের লবন চাষি আবুল হোছাইন বলেন, লবণ মৌসুমের শুরু থেকে লবণের দাম ভালই ছিল। চাষীদের মুখে ছিল হাসি। অজ্ঞাত কারণে লবণের দরপতনে তারা হতাশ। ৬০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকার নিচে নেমে গেছে প্রতিমণে।

এছাড়া মরার ওপর খরার ঘা হিসেবে এক সপ্তাহ যাবত ঘন কুয়াশা থাকায় মাঠে লবণও উঠছে কম। মৌসুম শেষে ৬ মাসে প্রতি একরে অন্তত ৭৫০ মণ লবন উঠে থাকে। এবার ৫০০ মণ হবে কিনা তারা সন্দিহান। রাজাখালী ইউনিয়নের চাষি আব্দু রহমান বলেন, দু‘দিনের ব্যবধানে লবনের দামে বিপর্যয় নেমে আসার কারণ তারা বুঝতে পারছেন না। লবণ ব্যবসায়িদের মাধ্যমে তারা লবন বিক্রি করে থাকেন। তারা যখন যেমন বলেন তেমনই শুনতে হয়। নারায়নগঞ্জ, খুলনা, চট্টগ্রামে লবণ টানছেনা-এমন অজুহাতে দামের ওঠা-নামা হয়ে থাকে। এভাবে হঠাৎ অর্ধেক দাম কমে যাওয়ায় তাদের লোকসান গুনতে হবে বলে জানান তিনি।

মগনামার লবণ ব্যবসায়ি মোহাম্মদ বাদশাহ বলেন, গত ৩ দিন আগে প্রায় ১৫ হাজার মণ লবন ভর্তি কার্গোবোট নারায়নগঞ্জ মিলে নেয়া হলে প্রতিমণ লবনে ১৫০- ২০০ টাকা করে কমে দিতে হয়েছে।

এতে তার অন্তত ২০ লাখ টাকা লোকসান দিতে হয়েছে। লবনের উৎপাদন বেশি আর চাহিদা কম থাকায় এমন হঠাৎ দরপতন বলে তিনি জানান। এ দিকে সচেতন মহল মন্তব্য করছেন, লবণের দাম কমে যাওয়ায় জমির লাগিয়তও কমে যাবে। যেখানে এক কানি জমির লাগিয়ত প্রতি মৌসুমে হতো ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। আগামী মৌসুমে সে পরিমাণ অর্ধেকে নেমে আসবে বলে মন্তব্য করেন। তবে তারা এ দরপতনের ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের দায়ী করেন।

পিডিএস/এমএইউ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
কক্সবাজার,পেকুয়া,লবণ চাষ,সিন্ডিকেট
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close