আব্দুস সালাম বাবু. বগুড়া:

  ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

পোড়াদহ মেলায় কোটি টাকার মাছ বেচাকেনা

ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

বগুড়ার গাবতলীতে মহাধুমধামে শেষ হল ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলা, এটা সন্নাসী মেলা নামেও পরিচিত। মেলাকে ঘিরে আশেপাশের পাঁচ উপজেলার শতাধিক গ্রামজুড়ে চলে উৎসবের আমেজ। সেই সঙ্গে চলে অতিথি আপ্যায়ন, জামাই ঝিয়ের নাইওর আর মাছ ও মিষ্টি কেনার ধুম। ঈদ বা অন্য কোনো উৎসবে জামাই মেয়ে সহ নিকট আত্মীয়দের দাওয়াত না দিলেও চলে, কিন্তু পোড়াদহ মেলায় সবাইকে দাওয়াত দিতেই হয়, এটাই এলাকার রেওয়াজ। মেলায় কোটি টাকার মাছ বেচাকেনা হয়েছে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, সন্ন্যাসী পুজা উপলক্ষে প্রতিবছর মাঘ মাসের শেষ বুধবার গাবতলীর ইছামতির তীরে পোড়াদহ মেলা বসে। প্রায় আড়াই’শ বছরের অধিক সময় ধরে চলে আসা এ রীতি। শিশু কিশোর, নারী পুরুষ সহ সব বয়সী মানুষের ঢল নামে মেলায়। মেলার আকর্ষন মাছ ও মিষ্টি। কে কত বড় মাছ কিনল, তার প্রতিযোগিতা শুরু হয়। প্রতি কেজি ২ হাজার টাকা দরে ৪০ কেজি ওজনের ব্লাক কার্প ছিল মেলার সবচেয়ে বড় মাছ। যার দাম হাঁকা হয়েছে ৮০ হাজার টাকা।

গাবতলীর গোলাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা বজলুর রহমান বলেন, নাটোর থেকে মাছটি এনেছি। সিরাজগঞ্জ থেকে আসা বাচ্চু সরকার নামে এক মাছ বিক্রেতা বলেন, ৩০ কেজি ওজনের কাতল এনেছি। দাম ১২৫০ থেকে ১৩০০ টাকা কেজি চাচ্ছি। প্রতি কেজি ১৩’শ টাকা দরে ২০ কেজি ওজনের বোয়াল ১ হাজার থেকে ১৬’শ টাকা কেজি, ১৮ কেজি ওজনের ব্রিগেড ৮’শ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া আকারভেদে রুই ৪শ থেকে ৭’শ টাকা কেজি, চিতল ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা, পাঙ্গাস সহ অন্যান্য মাছ সর্বনিম্ন ৩শ টাকা থেকে ১৫’শ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।

মাছ আকৃতির ১ থেকে ১২ কেজি ওজনের মিষ্টি বিক্রি হয়েছে ২’শ থেকে ৫’শ টাকা কেজি দরে। মেলায় ছিল শিশুদের খেলাধুলার সামগ্রী। এছাড়াও রয়েছে হরেক রকমের খাবারের দোকান। মিষ্টি ব্যবসায়ী মঞ্জুরুল হক ভুট্টো ও আব্দুল বারী শাহ জানান, তারা মেলা উপলক্ষে বড় আকৃতির মিষ্টি তৈরি করেছেন। রাজশাহী থেকে আসা সাইফুল ইসলাম জানান, তিনি মাছ কিনতেই এখানে এসেছেন। এত বড় মাছ দেখে তিনি আনন্দিত।

মেলার আয়োজক ও গাবতলীর মহিষাবান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ মন্ডল জানান, ঐতিহ্যবাহী মেলাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়রা উৎসবে মেতে উঠে।

বগুড়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেলেনা আক্তার বলেন, স্থানীয়রা যাতে কেনাকাটা করে নিরাপদে ঘরে ফিরতে পারে সেক্ষেত্রে জেলা পুলিশ তৎপর রয়েছে। মেলায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য বগুড়া সদর থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার পূর্বে ইছামতির তীরে পোড়াদহ আড়াই’শ বছর ধরে চলে আসছে এই মেলা। সেখানে বিশাল বট গাছে নীচে আসেন এক সন্নাসী। তিনি আশ্রম তৈরি করেন। সেখানেই সন্নাসী মেলা হত।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
পোড়াদহ,মেলা,মাছ
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close