বলরাম দাশ অনুপম, কক্সবাজার
পেকুয়ায় খেজুর গাছে কমে গেছে রস

কক্সবাজারের পেকুয়ায় বিলুপ্ত হতে যাচ্ছে খেজুর গাছ। হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য সুস্বাদু খেজুরের রস। এক সময় এই এলাকায় বাড়িতে, সড়কের পাশে প্রচুর খেজুর গাছ দেখা যেত। শীতকালে ভোরে পাওয়া যেতো রস। এখন গাছ নেই বললেই চলে। যা আছে, সেগুলো থেকে আগের মতো রস পড়ে না।
পেকুয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এ চিত্রই দখা গেছে। টইটং ইউনিয়নের হিরাবুনিয়া পাড়া গ্রামের গাছি আনছার উদ্দীন বলেন, আগে পরিবেশ ভালো ছিল, প্রতিটি ফল মূলের গাছ ছিল ফুলে ফলে ভরা। বিভিন্ন স্থানে ইটভাঁটা হওয়ায় এলাকার পরিবেশ দূষিত হয়ে গেছে। গাছে আগের মতো ফল ধরে না। আগে সকালে হাড়ি নামিয়ে যাওয়ার পরও গাছ থেকে ফোঁটা ফোঁটা রস ঝরতে থাকত দুপুর পর্যন্ত। এখন রস ঝরা তো দূরের কথা সারা রাতে মাঝারি আকারের কলসই ভরে না।
রস সংগ্রহকারী আবু তাহের বলেন, ২০২০ সালেও ৫টি গাছ থেকে দৈনিক রস সংগ্রহ হতো প্রায় ২৫ লিটার। আর গত বছর এসে সংগ্রহ হয়েছে দিনে ১০ লিটার। এ বছর সংগ্রহ করছি সর্বোচ্চ দিনে ৫ লিটার। তিনি আরো বলেন, ইট ভাঁটার দূষিত কালো ধোঁয়া পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। এর প্রভাবে গাছের শক্তি ও ভিটামিন কমে গেছে। আমার ৫টি গাছের পাশে গর্ত করে প্রতিদিন পানি দিয়ে গাছগুলো সবল রাখার চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, এই এলাকায় আগে প্রচুর খেজুর গাছ ছিল, রসও পাওয়া যেতো। কিন্তু পরিবেশ দূষণের কারণে খেজুর গাছ কমে গেছে। একসময় প্রতি লিটার খেজুর রস বিক্রি হতো ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। বর্তমান সে খেজুরের রস ১৫০ টাকা। অনেক জায়গায় ২০০ টাকাও বিক্রি হচ্ছে। বৈশাখ মাস পর্যন্ত রস সংগ্রহ করা যায়।
পেকুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তপন কুমার রায় জানান, খেজুরের রসের সঙ্গে বাঙালি সংস্কৃতির একটি মিল রয়েছে। নানা কারণেই দিন দিন খেজুর গাছগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। এ ঐতিহ্য ধরে রাখতে হলে সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে খেজুর গাছ রোপণে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। টইটং পাহাড়ী এলাকার মাটি খেজুর চাষের উপযোগী। উপজেলা পর্যায়ে গাছ বিতরণকালে খেজুর চারা প্রদানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানাবো।