মিলন রায়হান, জয়পুরহাট

  ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

জয়পুরহাটে যত্রগত্র গড়ে উঠেছে প্লাস্টিক কারখানা

পাঁচবিবি উপজেলায় পরিত্যক্ত একটি প্লাস্টিক রিসাইকেলিং কারখানা

কোনো ধরনের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার যত্রগত্র গড়ে উঠছে পরিত্যক্ত প্লাস্টিক রিসাইকেলিং বা পুনর্ব্যবহার কারখানা। এসব কারখানায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করা শ্রমিকরা রয়েছেন চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। তাছাড়া এখানকার বিষাক্ত পানিতে নষ্ট হচ্ছে ফসল আর বর্জ্য পোড়ানোর ধোয়া ও অসহ্য দুর্গন্ধে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলার পাঁচবিবি উপজেলার নওদা, নাকুড়গাছি, হঠাৎপাড়া ও বিজিবি ক্যাম্প এলাকার লোকালয়ে ও সড়কের পাশে গড়ে উঠেছে পরিত্যাক্ত প্লাস্টিক রিসাইকেলিং কারখানা। বিভিন্ন জায়গার হকারদের কাছ থেকে পরিত্যাক্ত প্লাস্টিক সামগ্রী ক্রয় করে তা রঙ অনুযায়ী আলাদা করে কাটিং মেশিনের মাধ্যমে ছোট ছোট টুকরায় পরিণত করে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে প্রক্রিয়াজাত করার পর বস্তায় ভরে বিক্রির জন্য পাঠানো হচ্ছে ঢাকায়।

নওদা গ্রামের ইলিয়াস আলী বলেন, এই কারখানার বিষাক্ত পানি নষ্ট করছে আশপাশের ফসল আর এখানকার বর্জ্র পোড়ানোর ধোয়া ও দূর্গন্ধ এলাকায় থাকা কষ্ট হয়ে যায়। সেইসঙ্গে এই পানি যে এলাকায় যায়, সেখানের ফসল ভালো হয় না।

পাঁচবিবি দরগাপাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন, সুহেল রানা বলেন, এই কারখানা নির্মাণের ফলে কিছু মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। কিন্তু এর বিষাক্ত ধোয়ায় এলাকায় মানুষের ক্ষতি হচ্ছে। একইসঙ্গে ওর আশে পাশে জমিতে ফসলের ব্যপক ক্ষতি হচ্ছে।

এই কারখানায় কাজ করা কয়েকজন শ্রমিক জানায়, তাদেরকে সারাদিন পরিশ্রম করে নিয়ে মাত্র ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়; এসব কারখানায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করছেন শতাধিক শ্রমিক। জীবনের ঝুকি নিয়ে সারাদিন কাজ করলেও শ্রমের নায্য মূল্য পাচ্ছেন না তারা।

পাঁচবিবি পৌরসভার কউিন্সিলর আনিসুর রহমান বাচ্চু বলেন, এই কারখানাগুলোর ফলে এলাকার পরিবেশ ও ফসল বিনষ্ট হচ্ছে। শ্রমিকদের মজুরি ঠিকমতো দেওয়া হয় না। অন্যদিকে স্বাস্থ ঝুকির মধ্যেও থাকতে হয় এসব শ্রমিকদের, তাই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।

মেসার্স মোমেন প্লাষ্টিক সেন্টারের স্বত্ত্বাধিকারী আব্দুল মোমেন বলেন, এসব কারখানার পরিবেশ ছাড়পত্র ও প্রয়োজনীয় কোন কাগজপত্র না থাকলেও অবৈধভাবে এই ব্যবসা চালিয়ে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন এসব রিসাইকেলিং কারখানার মালিকরা।

এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ ফারুক হোসেন বলেন, এসব রিসাইকেলিং কারখানার কোনো তথ্য নেই পরিবেশ অধিদপ্তরে। তদন্তসাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রকৃতি, পরিবেশ ও ফসল রক্ষার পাশাপাশি শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও নায্য মজুরি নির্ধারনে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিবেন সংশ্লিষ্ট বিভাগ এমনই প্রত্যাশা সকলের।

পিডিএস/মীর

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
জয়পুরহাট,প্লাস্টিক কারখানা,পাঁচবিবি উপজেলা
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close