ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে :

  ৩১ জানুয়ারি, ২০২৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিখোঁজ স্বতন্ত্র প্রার্থীকে উদ্ধারে ইসির কঠোর নির্দেশ

ছবি : সংগৃহীত।

আর মাত্র এক দিন পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ সংদদীয় আসনের উপ-নির্বাচন। তার আগে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদ নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ করেছেন তার স্ত্রী মেহেরুন্নেছা। নিখোঁজের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে উদ্ধারের জন্য মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। পাশাপাশি নিখোঁজের ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা সাংবাদিকদের বলেন, ‘উপনির্বাচনে একজন প্রার্থীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এজন্য তদন্ত করতে বলেছি যে, আসলে ঘটনাটা কী হয়েছে। ঘটনার সত্যতা কতটুকু এটা জানার জন্যই তদন্ত করতে ডিসি, এসপি ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে।’

সব বিষয়ই তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে জানিয়ে নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা সোমবার সংবাদিকদের বলেন, আগে রিপোর্ট আসুক, তারপর সিদ্ধান্ত। আমাদের মতো করেই আমরা কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি–যেভাবে পারো ওনাকে উদ্ধার করো। অলরেডি এটা আমরা নির্দেশ দিয়েছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উদ্ধার করতে পারবে না, এটা আমরা বিশ্বাস করি না।

আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (আশুগঞ্জ-সরাইল) আসনের উপ-নির্বাচনে লড়তে ১৩ প্রার্থীর মধ্যে আটজনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন। তাদের মধ্যে তিন জন প্রার্থী তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছে। একজন বিবৃতি দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। চার জন প্রার্থী এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতায় রয়েছেন।

প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকা বাকি চারজন হলেন সাবেক বিএনপি নেতা আব্দুস সাত্তার, জাতীয় পার্টির আব্দুল হামিদ ভাষানী, জাকের পার্টির প্রার্থী জহিরুল ইসলাম এবং স্বতন্ত্র আবু আসিফ আহমেদ।

এই উপ-নির্বাচন ঘিরে সর্বত্র আলোচনা আব্দুস সাত্তারকে নিয়ে। আওয়ামী লীগের স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারাও প্রকাশ্যে সাত্তারের পক্ষে কাজ করছেন বলে গণমাধ্যমে খবর আসছে।

এর মধ্যেই স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদের ‘খোঁজ মিলছে না’ বলে খবর আসে রবিবার। আবু আসিফ আহমেদ আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এবং উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। ভোটে দাঁড়ানোয় তাকেও দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

তার স্ত্রী মেহেরুন্নিছা রবিবার সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, গত ২৭ জানুয়ারি রাত থেকে আসিফ ‘নিখোঁজ’, তার মোবাইল ফোনও বন্ধ। তিনি কোথায় এবং কী অবস্থায় আছেন তা বুঝতে পারছেন না। প্রতিনিয়ত তাদের হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে। বাড়িতে পুলিশ এসে অযথা তল্লাশি করে হয়রানি করছে। বাড়ির সামনেও কিছু পুলিশ আসা যাওয়া করছে। তবে আসিফের পরিবার বিষয়টি প্রশাসন কিংবা পুলিশকে জানায়নি; কোনো আইনগত ব্যবস্থাও নেয়নি।

এর আগে আবু আসিফ আহমেদ জানিয়েছিলেন, ২৫ জানুয়ারি রাত থেকে তার শ্যালক ও নির্বাচন পরিচালনাকারী কমিটির প্রধান সমন্বয়ক শাফায়েত হোসেন (৩৮) ‘নিখোঁজ’ রয়েছেন। একই দিন মধ্যরাতে আসিফের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট মুসা মিয়াকে (৮০) একটি মারামারির মামলায় গ্রেফতার করে পুলিশ।

আসিফের স্ত্রী মেহেরুন্নিছা রবিবার সাংবাদিকদের বলেন, “এখন নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে যে এজেন্ট দেব, তাও খুঁজে পাচ্ছি না। কারণ সবাইকে হুমকি দেয়া হচ্ছে। তাদের ভয়ে আমি নিজেই পালিয়ে ছিলাম। আজকের মধ্যে খোঁজ না পেলে কাল (সোমবার) সকালে থানায় অভিযোগ করব।”

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, পুলিশ তার (আবু আসিফ) বাড়িতে গিয়ে হয়রানি করেনি। পুলিশ কখনোই তার বাড়িতে যায়নি এবং এখনো নেই। তিনি নিখোঁজ কিনা সে বিষয়েও আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেইে। এ ব্যাপারে পুলিশের কাছে কোনো অভিযোগও করেনি।

পিডিএস/এএমকে

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ব্রাহ্মণবাড়িয়া,নিখোঁজ,স্বতন্ত্র প্রার্থী,ইসি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close