তজুমদ্দিন (ভোলা) প্রতিনিধি
মুক্তিপণে ছাড়া পেলেন ৯ জেলে

ভোলার তজুমদ্দিনের মেঘনা নদীতে অপরহরণের দুদিন পর মুক্তিপণের বিনিময়ে নয় জেলে ছাড়া পেয়েছে । শনিবার (৩ ডিসেম্বর) তজুমদ্দিন উপজেলার জেলেরা বাড়ি ফিরে এসেছেন। অপহরণের এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত জেলেরা থানায় কোনো অভিযোগ করেননি।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) গভীর রাতে চর জহিরউদ্দিন ও চর মোজাম্মল এলাকার মেঘনা নদীতে মাছ ধরার সময় সশস্ত্র ডাকাতরা ১৫টি ট্রলারে হামলা চালায়। এ সময় তারা ১৫ জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। বিকাশে মুক্তিপণের টাকা পেয়ে অপহৃত ১৫ জেলের মধ্যে তজুমদ্দিনের নয় জেলেকে মুক্তি দিয়েছে ডাকাত দল। অপহরণের দুদিন পর বাড়ি ফিরে আসা জেলেরা হলেন উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের উত্তর চাপড়ী গ্রামের আলাউদ্দিন, হাসান, সালাউদ্দিন ও ইউছুফ, চাঁদপুর ইউনিয়নের মাওলানা কান্দি গ্রামের লোকমান, হান্নান, মহাজনকান্দি গ্রামের আরিফ, বালিয়াকান্দি গ্রামের হাসেম ও ভুলাই কান্দি গ্রামের মিরাজ।
বাড়ি ফিরে জেলেরা জানান, শুক্রবার গভীর রাতে মুক্তিপণ আদায় করে তাদের ইলিশা মাছ ঘাটের দক্ষিণ পাশে মাঝির ঘাট নামে একটি নির্জন এলাকায় ডাকাতরা নৌকা থেকে নামিয়ে দেয়। পরে তারা শনিবার বিভিন্ন সময় বাড়ি ফিরে আসলেও বাকিদের সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে তারা অন্য এলাকার হওয়ায় ডাকাতরা তাদের আলাদা স্থানে রেখেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলে বলেন, অপহরণের পর তজুমদ্দিনের নয় জেলেসহ ১৫ জনকে ভোলার তুলাতলির পূর্ব পাশে মেঘনার একটি চরে নৌকার মধ্যে বেঁধে রাখে। শুক্রবার সকালে শাহিন ও নীরবের মাছের আড়তে মাছ ও জাল বিক্রি করা হয়। এ সময় ডাকাতরা শাহিন ও নীরবের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে কথা বলতে শোনেন অপহৃত জেলেরা। মাছ বিক্রির পরে ডাকাতরা জেলেদের ব্যাপক মারধর করে। পরে মৎস্য আড়তদার ও স্বজনদের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলতে দেন। এ সময় ডাকাতরা জেলেদের জীবিত ফেরত নিতে এক লাখ টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করে। পুলিশকে কোনো তথ্য জানালে কাউকে জীবিত ফেরত পাবে না বলেও হুমকি দেয়।
হাকিমুদ্দিন নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ওসি শরিফুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন নদীতে পুলিশের নিয়মিত টহল চলছে। অপহৃদের কাছে খোঁজ নিয়ে ডাকাত দলের অবস্থান শনাক্ত করতে কাজ চলছে। আশা করছি ধরা পড়বে।
তজুমদ্দিন থানার ওসি মাকসুদুর রহমান মুরাদ জানান, অপহৃত নয় জেলে বাড়ি ফেরার তথ্য পেয়েছি। তাদের আইনগত সহায়তা নেওয়ার জন্য বলা হলেও এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। তবে ডাকাতদের কিছু বিকাশ নম্বর জেলেরা দিয়েছে, আমরা তা যাচাই করে দেখছি।