মো. দুলাল মিয়া, নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা)

  ০৪ ডিসেম্বর, ২০২২

নাঙ্গলকোটে কাটা হচ্ছে অর্ধশত বছরের শতাধিক গাছ

নাঙ্গলকোট উপজেলা পরিষদের প্রধান গেইটের সামনে কাটা হচ্ছে কড়ই গাছ। ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলা পরিষদ অফিসের সামনে ও আশপাশের শতাধিক গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। ফলে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। রবিবার (৪ ডিসেম্বর) উপজেলায় গিয়ে এসব পুরোনো গাছ কাটার চিত্র দেখা যায়।

এদিকে, উপজেলা বন কর্মকর্তা খন্দকার মোয়াজ্জেম হোসেন নিজেও জানেন না নাঙ্গলকোট উপজেলায় কত শতাংশ বনয়ন রয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখে যায়, উপজেলার সাব রেজিস্ট্রার ও বন কর্মকর্তার অফিসের সামনে বড় বড় আকৃতির অর্ধশত বছরের ছায়াকড়ই গাছ কাটছেন ইউছুফ নামের এক ব্যাক্তি। তার সঙ্গে রয়েছে ১২-১৫ জন শ্রমিক। এভাবে পুরো উপজেলা চত্তরে শতাধিক গাছ কাটবেন তারা।

জানা যায়, ১৯৮৩ সালে নাঙ্গলকোট উপজেলা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে গাছগুলো লাগানো হয়। গাছগুলো বছরের পর বছর পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে আসছে। মনোরম পরিবেশের বিশাল আকৃতির ছায়াকড়ই গাছগুলো দেখতে দৃষ্টিন্দন। গরমের সময় গাছের ছায়াতে বসে ক্লান্তি দূর করেন লোকজন। এ মনোরম পরিবেশ সৃষ্টিকারী গাছগুলো বিভিন্ন অজুহাতে কাটা হচ্ছে।

সাব রেজিস্ট্রার অফিসে দলিল করতে আসা বৃদ্ধ আব্দুল মালেক বলেন, ‘প্রায় সময় উপজেলায় আসলে এ গাছগুলোর নিচে বসে থাকি। অনেক ভালো লাগে। এখন দেখি গাছগুলো কেটে ফেলছে।’

মেসার্স স্বাধীন ফার্নিচারের মালিক ইউছুফ বলেন, টেন্ডারের মাধ্যমে গাছগুলো পেয়েছেন। তাই গাছগুলো কাটছেন।

উপজেলা বন কর্মকর্তা খন্দকার মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ভবনগুলো ঝুঁকিতে থাকায় টেন্ডারের মাধ্যমে গাছগুলো কাটা হচ্ছে। আবার নতুন করে গাছ লাগানো হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রায়হান মেহেবুব বলেন, গাছগুলো অনেক পুরোনো ও ঝুঁকিপূর্ণভাবে রয়েছে। তাই মাসিক সভায় সবার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টেন্ডারের মাধ্যমে গাছগুলো কাটা হচ্ছে। আবার নতুন করে গাছ লাগানো হবে।

এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর মাসুম বলেন, গাছগুলো সরকারিভাবে কাটা হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। আর পরিবেশ রক্ষার জন্য ২৫ শতাংশ গাছের প্রয়োজন। তাই গাছগুলো যাতে না কাটতে পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কুমিল্লা জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শওকত আরা কলি বলেন, পরিবেশের প্রধান উপাদান হচ্ছে গাছ। গাছ না থাকলে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটবে। তারপরও প্রয়োজনে বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নিয়ে গাছ কাটতে হয়। পরিবেশ রক্ষার জন্য একটি গাছ কাটলে পাঁচটি গাছ লাগাতে হয়।

এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, খোঁজ নিয়ে দেখি গাছগুলো টেন্ডারের মাধ্যমে কাটা হচ্ছে কি না। পুরোনো ঝুঁকিপূর্ণ গাছ হলে টেন্ডারের মাধ্যমে কাটা যাবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
নাঙ্গলকোট,গাছ,মাঠের বাইরে রোনালদো
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close