মো. শাহ আলম, খুলনা
৫ থেকে ১৬ ডিসেম্বর ঘোষণা করা হয়েছে নতুন ধারাবাহিক সাংগঠনিক কর্মসূচি
খুলনায় নতুন টার্গেটে আওয়ামী লীগ
খুলনায় ২২ অক্টোবর বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে বিএনপি গণসমাবেশ করলে সাংগঠনিক চ্যালেঞ্জে পড়ে আওয়ামী লীগ। এরপরই নিজ দলের নেতাকর্মীদের চাঙা করতে ধারাবাহিক কর্মসূচি দেওয়া হয়। বিভিন্ন ওয়ার্ড ইউনিট থানা ও মহানগর পর্যায়ে আওয়ামী লীগের সব কর্মসূচিতে অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ত করা হয়।
সর্বশেষ মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১ ডিসেম্বর শহরজুড়ে গণমিছিল করে আওয়ামী লীগ। ৫ থেকে ১৬ ডিসেম্বর ঘোষণা করা হয়েছে নতুন ধারাবাহিক সাংগঠনিক কর্মসূচি।
স্থানীয় উচ্চ পর্যায়ের নেতারা বলছেন, রাজপথে নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙা রাখতে টানা কর্মসূচি দেওয়া হচ্ছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এক দিকে দল গোছানোর প্রস্তুতি হাতে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। অপরদিকে রাজপথ নিয়ন্ত্রণে রাখতে দলীয় অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন নিয়ে সমন্বয় সভা, ওয়ার্ডভিত্তিক বর্ধিত সভা ও গণমিছিল করা হচ্ছে।
মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, বিএনপি- জামায়াতের ষড়যন্ত্রের কারণে গণতন্ত্র আজ হুমকির সম্মুখীন। তারা সরকার এবং দেশকে অশান্ত করতে নানা ধরনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তাদের এ চক্রান্তকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করা হবে। সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœসহ উন্নয়নে বাধা সৃষ্টিকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি আরো বলেন, জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি দেশের অভ্যন্তরে অরাজকতা সৃষ্টি করতে চায়। তারা পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া করার মতো দূরভিসন্ধি করছে। আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে অপরদিকে বিএনপি ইচ্ছাকৃতভাবে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছে। বিএনপির এই ষড়যন্ত্র কোনো অবস্থাতেই সফল হতে দেওয়া হবে না। বিজয়ের মাসের শুরু থেকেই তাদের সব ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে। বিজয়ের মাসের শুরু থেকেই তাদের সব ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা এত দুর্বল নয় যে, বিএনপির চ্যালেঞ্জে ভয় পেয়ে যাবে। দল যদি সক্রিয় থাকে প্রত্যেকটা অঙ্গ সংগঠন যদি সক্রিয় থাকে বাংলাদেশে এমন কোনো সংগঠন নেই আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনাকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে। তাদের ষড়যন্ত্র সফল হবে না। মাসব্যাপী কর্মসূচি পালনের মধ্যে দিয়ে আমরা প্রমাণ করতে চাই যে, পরাজিত শক্তিরা আর কোনো দিন ষড়যন্ত্র করে এদেশে সফল হতে পারবে না।
জানা যায়, বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ৩০ নভেম্বর মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা বলেন, তৃণমূলে দলকে সংগঠিত করতে থানা পর্যায়ে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা করা হয়েছে। এসব সভায় মূল দলের পাশাপাশি সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ, মহিলা লীগ, যুব মহিলা লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও কৃষক লীগকে সমন্বয় করা হয়।
আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, বিএনপির গণসমাবেশে নেতাদের দেওয়া বক্তব্যকে উসকানিমূলক মনে করছেন তারা। এছাড়া গণসমাবেশে যোগ দেওয়ার সময় ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ অফিসে ভাঙচুর, আধুনিক রেলস্টেশনে ভাঙচুরের ঘটনায় তারা ক্ষুব্ধ। এ কারণে পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে আন্দোলনে রয়েছে নেতাকর্মীরা।
এদিকে গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে নেতাকর্মীদের সুসংগঠিত করার আহ্বান জানিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী বলেন, বিএনপি বর্তমানে যে অবস্থার সৃষ্টি করছে তাতে জনগণ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। যে কারণে আওয়ামী লীগকে সাংগঠনিক পর্যায়ে গতিশীল করাসহ কোনো দল যাতে সন্ত্রাসী কর্মকা- করতে না পারে সেজন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, বর্ধিত সভার মাধ্যমে ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে দলকে সংগঠিত করা হচ্ছে। এছাড়া সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ বলেন, সব ভেদাভেদ ভুলে সর্বস্তরে দলকে সুসংগঠিত করতে হবে। রাজপথের আন্দোলনে নেতাকর্মীদের সক্রিয় থাকতে হবে। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে আবারও ক্ষমতায় আনতে হবে। না হলে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে।