দিনাজপুর প্রতিনিধি
ফুলবাড়ী মুক্ত দিবস রবিবার
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী মুক্ত দিবস রবিবার। ১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্র বাহিনীর যৌথ আক্রমণের মুখে টিকতে না পেরে হানাদাররা ফুলবাড়ী ত্যাগ করতে বাধ্য হলে এলাকা মুক্ত হয়।
মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ১৯৭১ সালের মার্চ ফুলবাড়ীতে গঠিত হয় সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটি। এপ্রিলের ২ তারিখ ফুলবাড়ীর পতন ঘটে। এরপর থেকে শুরু হয় বাঙালিদের ওপর দখলদার বাহিনীর নির্মম অত্যাচার, হত্যা, লুটতরাজ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা।
১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী এবং মিত্র বাহিনীর যৌথভাবে বেতদিঘী, কাজিহাল, এলুয়াড়ী, জলপাইতলী, পানিকাটা, রুদ্রানী, আমড়া ও রানীনগর এলাকার বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে প্রবেশ করে চর্তুমুখী আক্রমণ চালায়। ফুলবাড়ী শহরে তাদের প্রবেশ ঠেকাতে ওই দিন বিকাল সাড়ে ৩টায় ছোট যমুনার ওপর লোহার ব্রিজটির পূর্বাংশ শক্তিশালী ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেয় হানাদার বাহিনী। এ কারণে যৌথ বাহিনীর ফুলবাড়ী শহরে প্রবেশ করতে দেরি হয়। আর এই সুযোগে হানাদার ও অবাঙালিরা বিশেষ ট্রেনে করে ফুলবাড়ী থেকে সৈয়দপুর চলে যায়। ট্রেনটি ধ্বংসের জন্য মুক্তিযোদ্ধারা কয়েকটি মর্টারশেল নিক্ষেপ করলে তা ব্যর্থ হয়। এভাবেই মুক্ত হয় ফুলবাড়ী।
ফুলবাড়ী স্বাধীন হওয়ার তিন দিন পর ৭ ডিসেম্বর ভারতীয় বাহিনীর সাঁজোয়া যান ছোট যমুনা নদী পার হয়ে চকচকা রাইস মিলের ওপরে রাস্তায় এসে দাঁড়ালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে যানটি বিধ্বস্ত হয়। সাঁজোয়া যানে থাকা ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক অফিসারসহ তিনজন নিহত হন। নিহত তিন ভারতীয় সেনাসদস্যকে ছোট যমুনা নদীর তীরের সরকারি কলেজ সংলগ্ন স্থানে সমাধিস্থ করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধকালীন জুনিয়র কমান্ডিং অফিসার ও সাবেক মন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ মনসুর আলী সরকার জানান, ‘৪ ডিসেম্বর ফুলবাড়ীতে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকিস্তানি বাহিনীর বেশ কয়েকটি যুদ্ধ হয়। টিকতে না পেরে হানাদাররা ফুলবাড়ী ত্যাগ করে। তাই ৪ ডিসেম্বরকেই ফুলবাড়ী মুক্ত দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।