আব্দুস সালাম বাবু, বগুড়া

  ০২ ডিসেম্বর, ২০২২

পানিফল চাষে আগ্রহ কৃষকের

৩৬ হেক্টর জমি থেকে ৯০০ টন উৎপাদন

পানিতে জন্মে বলে নাম পানিফল। লতাপাতার মতো জলাশয়ে ভাসতে দেখা যায় পানিফলের গাছ। নিচু জমি এবং বিল-জলাশয়ে মৌসুমি ফসল হিসেবে পানিফল চাষ হয়। সিঙ্গাড়ার মতো দেখতে বলে স্থানীয়ভাবে সিঙ্গারা নামে পরিচিত। পানিতে ভরপুর ও প্রচুর খনিজ উপাদান পানিফলে। বগুড়ায় পতিত খাল-বিল ও জলাশয়জুড়ে চাষ হচ্ছে পানি ফলের গাছ। স্বল্প খরচে লাভজনক হওয়ায় গত বছরের তুলনায় এবার বেড়েছে চাষের জমি। পানিফল চাষে কৃষক আগ্রহী হওয়ায় প্রতিবছর চাষ যেমন বাড়ছে, তেমনি হাটে-বাজারে বেচাকেনাও বেশ ভালো। কম খরচে ভালো ফলনে ভালো দাম পেয়ে কৃষক খুশি। জেলা শহর ছাড়াও উত্তরের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে বগুড়ায় উৎপাদিত পানি ফল।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আষাঢ় মাস থেকে ভাদ্র-আশ্বিন পর্যন্ত চারা লাগানো যায়। চারা লাগানোর ২ থেকে আড়াই মাস পর ফল পরিপক্ক হয়। প্রতি গাছ থেকে ৩/৪ বার ফল তোলেন চাষিরা, পৌষ বা ডিসেম্বর পর্যন্ত পাওয়া যায়। এ ফলের কোনো বীজ নেই, মৌসুম শেষে পরিপক্ব ফল থেকে আবারও চারা গজায়, সে চারা পরে জলাশয়ে লাগানো হয়। শহর গ্রামে সবখানেই এ ফলের চাহিদা রয়েছে। সেদ্ধ করেও এ ফল খাওয়া যায়। বাজারে কাঁচা ও সেদ্ধ ফল বিক্রি হয়। গত বছর ২৫ হেক্টর জমিতে চাষ হলেও এবার ৩৬ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। যা থেকে ৯শ টন ফল উৎপাদন হবে। গাবতলী, শিবগঞ্জ ও সদর উপজেলাসহ বিভিন্ন উপজেলায় পানিফল চাষ হয়। বগুড়া শহরের চেলোপাড়া চাষিবাজারে প্রতিদিন ভোর থেকে সকাল ৮টার মধ্যেই শতাধিক মন পানিফল বিক্রি হয়। প্রতি মণ ৫শ থেকে ১ হাজার টাকা দরে কেনাবেচা হচ্ছে। মৌসুমের শুরুতে ১৪শ থেকে ১৬শ টাকা মন বিক্রি হয়েছে।

সাবগ্রাম এলাকার চাষি আব্দুস সামাদ বলেন, গত কয়েক বছর ধরেই তিনি পানিফল চাষ করেন, অন্য ফসলের তুলনায় খরচ কম, সার কীটনাশকের ব্যবহার নেই বললেই চলে। স্বল্প খরচে লাভবান হওয়ায় এবারও পানিফল চাষ করছেন বলে জানান এই চাষি। দোবিলা এলাকায় পানিফল চাষে সফল আবু বক্কর, আব্দুর রহমান বলেন, এসময়ে অন্য ফসল হয় না বলেই পানিফল চাষ করেন, নিচু জমি হওয়ায় আমন ফসল হয় না। প্রতি বছর জমি ফেলে না রেখে তারা পানিফল চাষে লাভবান হচ্ছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বগুড়ার অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শষ্য), মো. এনামুল হক বলেন, লাভজনক হওয়ায় বগুড়া সদর, গাবতলীসহ বিভিন্ন উপজেলায় চাষাবাদ বেড়েছে। কীটনাশক ও সার কম ব্যবহার হওয়ায় এটি পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাবার। আগামীতে আরো বেশি জমিতে চাষাবাদের জন্য কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে, যাতে জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্য জেলায় পাঠানো যায়।

পিডিএস/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
কৃষক,পানিফল চাষ,বগুড়া
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close