ভাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
ছাত্রীর শ্লীলতাহানি, ক্ষোভে উত্তাল ভাঙ্গা
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে শরীফাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সাখায়াত হোসেনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) সকালে ভুক্তভোগী নিজেই ভাঙ্গা থানা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এ ঘটনার পর থেকে ক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ভাঙ্গা। বিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থী স্কুলের সামনে অবস্থায় নেয় ও সড়ক অবরোধ করে রাখেন। তারা প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে।
ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর লিখিত অভিযোগর সূত্রে জানা যায়, ৩০ নভেম্বর সকালে শরীফাবাদ স্কুলে পরীক্ষা দিচ্ছিল ওই ছাত্রী। পরীক্ষায় নকল করার অভিযোগ তার খাতা নিয়ে যান স্বরবানী সাহা নামে এক শিক্ষক। এ সময় প্রায় ঘণ্টাব্যাপী ওই শিক্ষার্থীর খাতা আটকে রাখা হয়। মেয়েটি কান্নাকাটি করলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে গিয়ে তার অনুমতি আনার কথা বলেন ওই শিক্ষক। পরে মেয়েটি প্রধান শিক্ষক সাখায়াত হোসেনের কাছে গিয়ে তার খাতা চাইলে তিনি তার রুম যেতে বলেন মেয়েটিকে। পরে রুমের মধ্যে প্রবেশ করতেই প্রধান শিক্ষক সাখায়াত শ্লীলতাহানি করেন। একপর্যায়ে মেয়েটি চিৎকার দিলে তার মুখ চেপে ধরেন প্রধান শিক্ষক শাখায়াত এবং ঘটনাটি কাউকে না জানানোর জন্য মেয়েটিকে হুমকি দেন। পরে মেয়েটি পরীক্ষা না দিয়ে বাড়িতে গিয়ে পরিবারকে ঘটনা জানায়।
মেয়েটির বাবা বলেন, আমরা গরিব মানুষ। কাজ করি, ভাত খাই। খুব কষ্ট করে মেয়েটির পড়ালেখা চালাই। বিষয়টি মীমাংসার জন্য সাখায়াতের পক্ষ থেকে বিভিন্ন মহল তার পরিবারকে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করছে। কিন্তু তিনি কোনো মীমাংসায় যাননি। সুষ্ঠু বিচারের আশায় প্রশাসনকে জানিয়েছেন।
তবে প্রধান শিক্ষক শাখায়াত হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা এবং বানোয়াট।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) হেলাল উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, বুধবার রাতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটির তদন্তের জন্য ভাঙ্গা থানার ওসিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিম উদ্দিন জানান, অভিযোগ পেয়েছি। ইতোমধ্যে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। ওসির সঙ্গে তিনি ঘটনার বিষয়ে সরেজমিন তদন্ত করছেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।