reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০১ ডিসেম্বর, ২০২২

গাজীপুরে পৃথক মামলায় একজনের ফাঁসির রায়, আরেকজনের কার্যকর

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দি বীর মুক্তিযোদ্ধা হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড আসামি কামাল ওরফে এক্সেল কামাল (৪৭) ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। বুধবার (৩০ নভেম্বর) রাত ১১টা ১ মিনিটে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এ তার ফাঁসি কর্যকর করা হয়। অপরদিকে, সাবেক স্ত্রীকে হত্যার দায়ে সাইফুল ইসলাম ওরফে শরিফুল (৪৭) নামে এক ব্যক্তির ফাঁসির দণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে গাজীপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মমতাজ বেগম এ আদেশ প্রদান করেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা হত্যা মামলার আসামি কামাল ওরফে এক্সেল কামাল মাদারীপুরের শিবচর থানার বাহাদুরপুর এলাকার আঃ বারেক হাওলাদারের ছেলে। তার বর্তমান ঠিকানা নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার কোতয়ালেরবাগ এলাকায়। তিনি নারায়ণগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা গিয়াস উদ্দীন মেম্বার হত্যা মামলার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ছিলেন।

গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এ সিনিয়র জেল সুপার মো. আমিরুল ইসলাম জানান, গিয়াস উদ্দীন মেম্বার হত্যায় ২০০৪ সালে মামলা হয়, আর ২০০৬ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত কামালকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ প্রদান করেন। পরে তিনি হাইকোর্ট আপিল করলে আদালত মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। পরে তিনি ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল বিভাগও মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। পরে তিনি ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে রিভিউ পিটিশন করেন। রিভিউ পিটিশনও ২২ সালের ২৮ এপ্রিল তারিখে খারিজ করে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন।

কারা কর্তা আরো জানান, পরে কামাল প্রাণভিক্ষা চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপতি গত ১ নভেম্বর তার আবেদন না মঞ্জুর করেন। অপরদিকে, স্ত্রী হত্যা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত সাইফুল ইসলাম ওরফে শরিফুল নীলফামারী সদরের রামকলা মৌলভীপাড়া এলাকার মৃত নূর আলমের ছেলে। তিনি কাশিমপুরের সারদাগঞ্জ এলাকায় থেকে একটি পোশাক কারখানায় দৈনিক মুজুরির ভিত্তিতে শ্রমিক ছিলেন।

নিহতের নাম মোহছেনা বেগম (৩৫)। তিনি রংপুরের পীরগাছা থানার সৈয়দপুর এলাকার মুজিবুর রহমানের মেয়ে। তিনি কাশিমপুর এলাকায় ভাড়া থেকে পোশাক কারাখানায় চাকরি করতেন।

গাজীপুর আদালতের (ভারপ্রাপ্ত) পি পি মকবুল হোসেন কাজাল জানান, শরিফুল ও মোহছেনার বিয়ের পর মোহছেনা জানতে পারে শরিফুল আগে বিয়ে করেছে এবং ওই সংসারে চারজন ছেলেমেয়ে রয়েছে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কলহ হতো। ৩ বছর সংসার করার পর মোহছেনা শরিফুলকে তালাক দেন। এরপর থেকে শরিফুল প্রায়ই মোহছেনাকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি এবং খুন জখমের হুমকি দিত। ২০২০ সালের ৭ ডিসেম্বর মোহছেনা ভাড়া বাসায় গিয়ে তার অপর বোন মমতাজ বেগম দরজা বন্ধ পেয়ে ডাকাডাকি করে। সাড়া না পেয়ে স্বজন ও পুলিশে খবর দেন। পুলিশ দরজা ভাঙার প্রস্তুতি নিলে শরিফুল দরজা খুলে বের হয়। এ সময় ঘরে মোহছেনার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ও জবাই করা নিথর দেহ ও শরিফুলের শরীরের বিভিন্ন স্থান রক্তাক্ত দেখতে পেয়ে শরিফুলকে আটক করে পুলিশ। এ ব্যাপারে মোহসেনার ভাই সাদ্দাম হোসেন বাদী হয়ে কাশিমপুর থানায় মামলা করেন।

পরে তদন্ত শেষে কাশিপুর থানার এসআই দিপঙ্কর রায় ২১ সালের ১০ মার্চ শরিফুলকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ১৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও শুনানি শেষে আদালত বৃহস্পতিবার এ রায় ঘোষণা করেন।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
মৃত্যুদণ্ড
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close