মো. শাহ আলম, খুলনা

  ২৯ নভেম্বর, ২০২২

শিশু হাসপাতালে চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা

খুলনায় বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগ

ফাইল ছবি

খুলনায় ডেঙ্গু সংক্রমণের মধ্যে শীত মৌসুমের শুরুতে ঠান্ডাজনিত রোগবালাই বাড়ছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা ফ্লু বা ইনফ্লুয়েঞ্জা, ব্রংকাইটিস, নিউমোনিয়া ও অ্যাজমায় আক্রান্ত হচ্ছে। খুলনা শিশু হাসপাতাল, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ ক্লিনিক হাসপাতালে ঠা-াজনিত অসুস্থতা নিয়ে ভিড় করছে মানুষ।

চিকিৎসকরা বলছেন, খুলনা শিশু হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৮০০-৯০০ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। যার অধিকাংশই ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। প্রতিদিন আউটডোরে রোগী সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের।

এদিকে মৌসুম পরিবর্তনের এ সময়ে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে বার বার হাত ধোয়া, নাকে-মুখে হাত না দেওয়া, আক্রান্ত পরিবার সদস্যদের ব্যবহৃত জিনিসপত্র ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

সংক্রামক ব্যাধির সঙ্গে সঙ্গে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে সাধারণ সর্দি-কাশি প্রকোপ। আক্রান্ত রোগীদের নাক বন্ধ, নাক দিয়ে পানি পড়া, মাথাব্যথা, গলাব্যথা, শারীরিক দুর্বলতা, শরীর ব্যথা, হাঁচি-কাশি ও অল্প জ্বর থাকছে।

খুলনা শিশু হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. কামরুজ্জামান জানান, হাসপাতালে কোনো সিট খালি নেই। আউটডোরে প্রতিদিন ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত প্রায় ৬০০ শিশুকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর বাইরে ভর্তি থাকছে ২৭০ জন শিশু। কোথাও কোনো জায়গা নেই। শীত মৌসুমের শুরুতে ঠান্ডা-গরমে সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়া রোগে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে।

তিনি বলেন, মায়েদের উচিত হবে এই সময় বাচ্চাদের ভারী কাপড় না পরানো। এতে বাচ্চারা ঘেমে ঠান্ডা বুকে জমে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। এ সময় বাচ্চাদের তরল জাতীয় পানীয়, ফলের রস, স্যালাইনের পানি, কুসুম গরম পানি বেশি খাওয়ানো প্রয়োজন। এছাড়া বাচ্চাদের খোলামেলা পরিবেশে রাখতে হবে। জানালা-দরজা বন্ধ করে রাখলে এতে বরং শ^াসকষ্ট বাড়তে পারে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোনো ওষুধ ছাড়াই ২-৪ দিনের মধ্যে এসব রোগী সুস্থ হয়ে যায়। পর্যাপ্ত বিশ্রাম, পরিমিত পরিমাণে তরল খাবার, কুসুম গরম লবণ পানি দিয়ে গড়গড়া, মধু খাওয়া এবং সেই সঙ্গে ঠান্ডা পানি ও খাবার পরিহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। তবে শিশু, বৃদ্ধ ও বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্য ডাক্তারের পরামর্শের প্রয়োজন হতে পারে। প্রতিরোধের জন্য বারবার হাত ধোয়া, নাকে-মুখে হাত না দেওয়া, আক্রান্ত পরিবার সদস্যের নিত্যব্যবহার্য জিনিসপত্র ব্যবহার না করা উচিত।

সাধারণ সর্দি-কাশির চেয়ে তীব্রতর উপসর্গ নিয়ে ইনফ্লুয়েঞ্জা হয়ে থাকে। সাধারণ সর্দি-কাশির অতিরিক্ত উপসর্গ হিসেবে বমি, পাতলা পায়খানা হতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি, কাশির মাধ্যমে মাধ্যমে ছড়ায় বলে বদ্ধ জায়গায় সংক্রমণ বৃদ্ধি পায়। এ ভাইরাস বছরে বছরে তার ধরন বদলায় দেখে এর বিরুদ্ধে প্রচলিত টিকা প্রতি বছরই নিতে হয়। শিশু, বয়স্ক ও বিভিন্ন জটিল রোগাক্রান্ত ব্যক্তির এ টিকা নেওয়া উচিত। সাধারণত ৭-১০ দিনের মধ্যে বেশির ভাগ উপসর্গের উপশম হলেও কাশি ভালো হতে অনেক সময় দুই সপ্তাহের বেশিও লেগে যেতে পারে। উপসর্গের তীব্রতা বেশি হলে অথবা আগে থেকেই জটিল রোগ আছে এমন ব্যক্তি, শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সাধারণ সর্দি-কাশির মতো সব চিকিৎসার সঙ্গে সঙ্গে এক্ষেত্রে অনেক সময় অ্যান্টিভাইরাল ওষুধের প্রয়োজন হতে পারে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
খুলনা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close