মারুফ আহমেদ, কুমিল্লা

  ২৫ নভেম্বর, ২০২২

বিএনপির সমাবেশ : কুমিল্লা টাউন হল মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ 

শুক্রবারেই নেতাকর্মীতে ভরে গেছে সমাবেশস্থল। ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

কুমিল্লার প্রাণকেন্দ্র কান্দিরপাড়ের টাউন হল মাঠ। এখানেই শনিবার (২৬ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হবে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ। তবে বিএনপির অন্য বিভাগীয় সমাবেশগুলোর ধারাবাহিকতায় কুমিল্লায়ও বৃহস্পতিবার থেকেই সমাবেশস্থলে নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেন। শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) টাউন হল মাঠে গিয়ে দেখা যায় সমাবেশস্থল প্রায় কানায় কানায় পূর্ণ।

কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড, উপজেলা, পাশের চাঁদপুর-ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসছেন। শুক্রবার দুপুরের পর থেকেই কুমিল্লা মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়েছে। শুধু টাউন হল মাঠ নয়, সমাবেশে যোগ দিতে আসা নেতাকর্মীরা টাউন হল সংলগ্ন বিভিন্ন অলিগলিতে অবস্থান করছেন। দূর-দূরান্ত থেকে আসা নেতাকর্মীদের জন্য বিএনপি নেতারা নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে খাওয়ার ব্যবস্থা করছেন। নেতা-কর্মীদের খাবারের জন্য ১০টি গরুর ব্যবস্থা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থানীয় নেতারা।

মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উৎবাতুল বারী আবু বলেন, ১০টি গরুর ব্যবস্থা হয়েছে। নেতা-কর্মীরা অনেকে শহরে পৌঁছে গেছেন। তাদের খাবার জোগানের জন্যই এ আয়োজন। কোনো নেতা-কর্মী যেন কষ্ট না পান তার জন্য আমাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা থাকবে। এছাড়াও কুমিল্লা সিটির সাবেক মেয়র ও বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা মনিরুল হক সাক্কুও সমাবেশকে কেন্দ্র করে সক্রিয় রয়েছেন। সমাবেশে আসা নেতাকর্মীদের জন্য পৃথকভাবে থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, খালেদা জিয়ার মুক্তি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, সংসদকে বিলুপ্ত, সরকারকে পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবিতে সাংগঠনিক বিভাগগুলোতে সমাবেশ করছে বিএনপি। তারই ধারাবাহিকতায় কুমিল্লা বিভাগের সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এদিকে সমাবেশের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় নগরীর একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশারফ হোসেন। এ সময় তিনি বলেন, সরকারের উচ্চপর্যায়ের নেতারা বলছেন খেলার কথা। আমরা বলি রাজনীতি আর খেলা এক না। আমরা সাধারণ মানুষের জন্য রাজনীতি করি। খেলা করি না। এই ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। আমরা সে গণতন্ত্রকে পুনরুজ্জীবিত করতে কাজ করছি। কুমিল্লার সমাবেশ যেন সফল না হয় সে জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাদা পোশাকধারী সদস্যরা নেতাকর্মীদের বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছেন। কৌশলে পরিবহন বন্ধ করা হচ্ছে। পথে পথে হয়রানি করা হচ্ছে। এসব হয়রানি উপক্ষো করে এরই মধ্যে কুমিল্লায় এসে পৌঁছেছেন বিভিন্ন জেলার নেতাকর্মীরা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সম্পাদক হাজী আমিনুর রশীদ ইয়াছিন, সদস্য সচিব জসিম উদ্দিন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উদবাতুল বারি আবু, সদস্য সচিব ইউসুফ মোল্লা টিপুসহ দলটির শতাধিক নেতা। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাজী আমিনুর রশীদ ইয়াছিন বলেন, সকাল ১০টায় সমাবেশ শুরু হবে। বিকাল ৪টার মধ্যেই শেষ হবে। এরই মধ্যে নেতাকর্মীরা এসে গেছেন।

সমাবেশস্থলেই জুমার নামাজ আদায় : বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে আসা নেতাকর্মীরা সভাস্থলসহ কেন্দ্রীয় ঈদগাহে আলাদাভাবে তিনটি জুমার নামাজ আদায় করেছেন। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাজি আমিনুর রশীদ ইয়াছিন বলেন, ‘দুই দিন আগ থেকেই নেতাকর্মীরা কুমিল্লায় পৌঁছতে শুরু করেছেন। তাদের থাকা-খাওয়াসহ সব রকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। শুক্রবার আমরা নেতাকর্মীরা মিলে জুমার নামাজ আদায় করেছি। নেতাকর্মীরা বেশ উৎফুল্ল। সমাবেশস্থলে আলাদাভাবে জুমার নামাজ আদায় করেন বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। তিনি তার সমর্থিত নেতাকর্মীদের নিয়ে জুমার নামাজ আদায় করেন। এদিকে সমাবেশস্থলের অদূরে কেন্দ্রীয় ঈদগাহে জুমার নামাজ আদায় করেছেন কুমিল্লার বুড়িচং ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার নেতাকর্মীরা।

বুড়িচং উপজেলা বিএনপির সভাপতি এ টি এম মিজানুর রহমান বলেন, আমরা আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখে জুমার নামাজ আদায় করেছি। এ বিষয়ে আমাদের সার্বিক সহযোগিতা করেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব হাজি জসিম উদ্দিন।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বিএনপির সমাবেশ,টাউন হল মাঠ
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close