রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন মেয়র পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের উচ্চ পর্যায়ের চার জন নেতা। এছাড়া জাতীয় পার্টির একজন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া মেয়র পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় অভিমান করে ও হতাশ হয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ের এই চার নেতা।

এদিকে বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) মনোনয়ন ফরম তুলেছেন মেয়র পদে আওয়ীমী লীগ মনোনীত প্রার্থী ডালিয়া। রংপুরে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা কর্মীই তার সঙ্গে ছিলেন। সহকারী রিটানিং কর্মকর্তা আফতাব হোসেন জানিয়েছেন, মেয়র পদে ৮ জন মনোনয়ন ফরম তুলেছেন। আর কাউন্সিলর ১৭২ জন, ও সংরক্ষিত ৬১ জন মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন।

নির্বাচন কমিশন ও দলীয় সূত্রগুলো জানায়, মনোনয়ন ফরম তুলেছেন ইঞ্জিনিয়ার লতিফুর রহমান মিলন (স্বতন্ত্র), জাতীয় পার্টি একাংশের মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, জাতীয় পার্টির অপর অপর অংশের প্রার্থী একেএম আব্দুর রউফ মানিক, জাকের পার্টির মোঃ খোরশেদ আলম, মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ও মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এমএ মজিদ, জামায়াতে ইসলামীর রংপুর মহানগরীর সাবেক আমীর মাহবুবার রহমান বেলাল এবং ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান বনি। অপরজন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আমিরুজ্জামান পিয়াল এবং তিনি মনোনয়ন ফরম পূরণ করে জমা দিয়েছেন।

আওয়ীমী লীগের প্রার্থী ডালিয়া বৃহস্পতিবার দলীয় নেতা কর্মীদের সমর্থণ নিয়ে মনোনায়ন ফরম তোলেন। দলের নেতা কর্মীরা বলেন, জনগণ আমাদের সাথে আছে। দলীয় সমর্থকরা মাঠে আছে। এই দেশের উন্নয়নের সমস্ত অর্জন আওয়ামী লীগের। মানুষ আমাদের প্রার্থীকে ভালোবাসেন। মানুষ আমাদের নেত্রীকে ভালোবাসেন। মানুষ আমাদের দলকে ভালোবাসেন। আগামী ২৭ ডিসেম্বর জনগণের ভোটে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী ডালিয়া আপাকে মেয়র হিসেবে নির্বাচিত করে আমাদের নেত্রীকে উপহার দেবো।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, জাপার চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ মূল দলের লাঙ্গল প্রতীকে মনোনায়ন দেবেন। কে পাবেন লাঙ্গল প্রতীক তা এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে লাঙ্গল প্রতীকের মনোনয়ন প্রত্যাশায় বুক বেঁধেছেন বেশ কয়েকজন। নগরবাসী বলছেন, লাঙ্গল নিয়ে রশি টানাটানি চলছে। কে পাবেন এই লাঙ্গল। তা নিয়ে নেতা কর্মীদের মধ্যে অনেক হিসাব- নিকাশ।

আগামী ২৭ ডিসেম্বর রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিতে মেয়রের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। বুধবার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বরাবর পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন তিনি। পরে পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রণালয়।

নৌকা মার্কা বুধবার নিশ্চিত হওয়ায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন রংপুর মহানগর আওয়ামী সভাপতি সফিয়ার রহমান সফি, সাধারণ সম্পাদক বাবু তুষার কান্তি মন্ডল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ও মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এম.এ.মজিদ, ও রওশন-রাঙ্গা সমর্থিত প্রার্থী বাংলার চোখ- এর চেয়ারম্যান তানবীর হোসেন আশরাফি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ ডা. আকতার হোসেন বাদল।

অন্যাদিকে সাংবাদিক সম্মেলনে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে সমাজ কর্মী হাজী তানবীর হোসেন আশরাফি জানান, রংপুরের মানুষের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য দক্ষ নেতৃত্ব জরুরি। এজন্য পরিকল্পনা ও সুষ্ঠু বাস্তবায়ন করার জন্য প্রয়োজন সুনিপুণ কর্মপরিকল্পনা। তাই নিজেকে রংপুরের মানুষের সেবায় নিবেদিত করতে নগরবাসীকে সঙ্গে নিয়ে বাস্তবায়নযোগ্য পরিকল্পনা গড়তে চান তিনি। এজন্য নগরবাসীর সঙ্গে আরও যোগাযোগ বৃদ্ধি করার ইচ্ছা রাখেন। তাই এবারের নির্বাচনে কোনো প্রচারণা চালাননি। সর্বশেষ বিএনপি প্রার্থী কাওছার জামান বাবলা জানান, দল তাকে এখনো অনুমতি দেয়নি।