রফিকুল ইসলাম রনি, চাটমোহর (পাবনা)
চাটমোহরে লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত কারিগর

পাবনার চাটমোহরে গত দুই সপ্তাহ ধরে আবহাওয়ার পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। রাত শেষে ভোরের আলো ফুটলেও কুয়াশাচ্ছন্ন থাকছে চারপাশ। সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত শীত অনুভূত হচ্ছে। দুইদিন ধরে বইছে হালকা শীতের হাওয়া। সন্ধ্যা হলেই গরম কাপড় পড়তে হচ্ছে স্থানীয়দের। জানান দিচ্ছে আগাম শীতের বার্তা। ঠিক এই সময় ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন লেপ-তোষক তৈরির কারিগরা। অনেকেই লেপ-তোষক তৈরির অর্ডার দিয়ে রাখছেন।
চাটমোহরের বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, লেপ-তোষক তৈরির কারিগরদের ব্যবসায়ীক মৌসুম শুরু হয়েছে। সার্বক্ষণিক ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। অনেকে লেপ তৈরির অর্ডার দিয়ে রেখেছেন। গত বছরের তুলনায় এবার লেপ তৈরির কাপড় ও তুলার দাম একটু বেশি। এজন্য গ্রাহকদের গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা।
চাটমোহরের হান্ডিয়াল দরাপপুর এলাকার মো. মিজানুর রহমান লেপ তৈরির অর্ডার দিতে এসে বলেন, সারাদিনে হালকা কাপড় পড়লেও সন্ধ্যার পর গরম কাপড় পড়তে হয়। রাতে কাঁথা বা চাদর গায়ে জড়িয়ে ঘুমাতে হয়। কয়েকদিন আগেও রাতে ফ্যান চালাতে হত। তিনি আরো বলেন, এবার শুরুতেই যে শীতের দাপট, তাতে মনে হচ্ছে প্রচুর ঠান্ডা পড়বে। তাই শীতের অগ্রিম প্রস্তুতি হিসেবে লেপ ও তোষক তৈরির অর্ডার দিতে এসেছি।
উপজেলার হান্ডিয়াল বাজারের লেপ-তোষক তৈরির কারিগর আল মাহমুদ জানান, গত বছরের তুলনায় এবার কাপড় ও তুলার দাম বেশি। এ কারণে লেপ-তোষক তৈরিতে অতিরিক্ত টাকা লাগছে।
আখি বস্ত্রালয় স্বতাধিকার আব্দুল লতিফ জানান, বর্তমানে প্রকার ভেদে লেপ-তোষক তৈরির কাপড় প্রতি গজে ১০ থেকে ১৫ টাকা দাম বেড়েছে। এছাড়া শিমুল তুলা প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, কার্পাস তুলা প্রতি কেজি ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, প্রতি কেজি কালো হুল ৮০ থেকে ১০০ টাকা, কালো রাবিশ তুলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, সাদা তুলা ৯০ টাকা থেকে ১১০ টাকা করে দাম চলছে।আকার অনুযায়ী লেপ-তোষক তৈরিতে ৩০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত মজুরি নেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে একটি ভালো মানের লেপ তৈরি করতে খরচ হচ্ছে আড়াই হাজার থেকে প্রায় তিন হাজার টাকা।
এছাড়া ভালো মানের তোষক তৈরি করতে খরচ পড়ছে তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা। গত বছর ভালো মানের লেপ তৈরিতে খরচ হয়েছে দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা। আর তোষক তৈরিতে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা।
কারিগর আল মাহমুদ আরও জানান, গত এক সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে ১৫ থেকে ২০টি লেপ-তোষকের অগ্রিম অর্ডার পেয়েছি। তাই সার্বক্ষণিক কাজেই ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে।