মৃণাল সরকার মিলু, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ)

  ২১ নভেম্বর, ২০২২

তাড়াশে মাদরাসা সুপারের বিরুদ্ধে ঘুষের অভিয়োগ 

মাদ্রাসার সুপার দলিলুর রহমান। ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

সিরাজগঞ্জের তাড়াশের রোকনপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার। গত অক্টোবর মাসে তার মাদ্রাসায় আয়া, নিরাপত্তা কর্মী ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর তিনটি পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেন। বর্তমানে নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। পাশাপাাশি তিনি তার মাদ্রাসার সহকর্মী ক্বারী শিক্ষক মো. মতিউর রহমানের ছেলেকে পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে নিয়োগের জন্য দুই বছর আগেই ১০ লাখ টাকা অগ্রিম ঘুষ নিয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে আরো ৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করছেন। এতে ওই সহকর্মী সাড়া না দিলে তার ছেলেকে নিয়োগ না দেওয়ার পায়তাঁরা করছেন এমন অভিযোগ এনেছেন মাদ্রাসার ক্বারী শিক্ষক মো. মতিউর রহমান।

পাশাপাশি বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে রবিবার (২০ নভেম্বর) বিকেলে বিকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেজবাউল করিম বরাবর একটি লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন ওই ভুক্তভোগী শিক্ষক।

রোকনপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার ইবতেদায়ি শাখার ক্বারী শিক্ষক মো.মতিউর রহমান তার লিখিত অভিযোগে তিনি দাবি করেন, মাদ্রাসায় এক সঙ্গে চাকুরি করার সুবাদে মাদ্রাসার সুপার দলিলুর রহমানের সঙ্গে তার সখ্য গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে আগামীতে মাদ্রাসার পরিচ্ছন্নতা কর্মীর শূন্য পদে সহকর্মী মতিউর রহমানের ছেলেকে চাকুরি দেবার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। পাশাপাশি দুই বছর আগে মাদ্রাসার সুপার তার কাছ থেকে অগ্রিম ১০ লাখ টাকা ঘুষ নেন। পরবর্তীতে গত অক্টোবর মাসে পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এরপর মতিউর রহমানের কাছে থেকে আরো ৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন এই মাদ্রাসার সুপার দলিলুর রহমান। কিন্তু মাদ্রাসার সুপারের সহকর্মী ক্বারী শিক্ষক মো.মতিউর রহমান অতিরিক্ত ৫ লাখ টাকা ঘুষ দিতে রাজি হননি। এরপর মাদ্রাসার সুপার অন্য আরেক প্রার্থীর সঙ্গে আরো বেশি টাকার ঘুষের বিনিময়ে পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে নিয়োগের পায়তারা শুরু করেন। এমন খবর জানার পর নিজের ঘুষের টাকা ফেরতের জন্য তিনি বার বার মাদ্রাসার সুপারকে তাগাদা দেন। কিন্তু সুপার সে ঘুষের টাকা ফেরত দেননি। এতে সংক্ষুদ্ধ হয়ে মতিউর রহমান রবিবার প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর তিনি একটি লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন। এ ছাড়া তার লিখিত অভিযোগের অনুলিপি মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও তাড়াশ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রদান করা হয়।

অবশ্য রোকনপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. দলিলুর রহমান তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, মাদ্রাসার তিনটি পদে নিয়োগ দেওয়াকে কেন্দ্র করে আমার বিরুদ্ধে বহুমূখী ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।

এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলামিন কাওছার বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির আগামী সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। তাড়াশ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফকির জাকির হোসেন বলেন, অভিযোগের অনুলিপি পেয়েছি।

এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেজবাউল করিম অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করে সোমবার (২১ নভেম্বর) সকালে তিনি জানিয়েছেন, বিষয়টি তদন্তের জন্য কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
তাড়াশ,মাদরাসা সুপার,ঘুষের অভিয়োগ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close