মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম,চট্টগ্রাম ব্যুরো
চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে ই-গেট, ভোগান্তি লাঘবে সহায়
বিশ্বের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাথে যুক্ত হয়ে গেল চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ই-পাসপোর্টধারীদের জন্য অতি প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিক গেট বা ই-গেট স্থাপন করা হয়েছে কয়েক দিন আগে। আগে যেখানে ঘন্টার পর ঘন্টা ইমিগ্রেশন শেষ করতে ভোগান্তির মুখে পড়তে হতো এখন মাত্র ১৮ সেকেন্ডেই এ কাজ শেষ হয়ে যাচ্ছে। গত ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় চালু ছয়টি গেটের কার্যক্রম সরেজমিন প্রত্যক্ষ করে এর বাস্তব সুফল লক্ষ্য করা গেছে।
চট্টগ্রামে বিমানবন্দরে স্থাপিত মধ্যে ছয়টি গেটের মধ্যে ৩টি গেট দিয়ে যাত্রীরা যাওয়ার সময় এবং বাকী ৩টি গেট দিয়ে আসার সময় ব্যবহার করছেন।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সরেজমিন দেখা গেছে, জার্মানির ভারিডোস কোম্পানির অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এসব ই-গেট ব্যবহারের জন্য প্রত্যেক যাত্রীর কাছে অবশ্যই ই-পাসপোর্ট থাকতে হবে। প্রথমে ই-গেটের প্রবেশপথে নিজের ছবি, তথ্য ও বারকোডযুক্ত পৃষ্ঠা স্ক্যান করতে হবে। সেখানে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে সব তথ্য যাচাই হলে খুলবে প্রথম ধাপ। এরপর স্বয়ংক্রিয়ভাবে ক্যামেরাযুক্ত ফেসিয়াল রিকগনিশনের মাধ্যমে পাসপোর্টের ছবির সঙ্গে যাত্রীর তাৎক্ষণিক পাওয়া মুখমন্ডল মিলানো হবে। মুখমন্ডল মিলে গেলে খুলে যাবে দ্বিতীয় গেটও। সার্ভার এবং সিষ্টেম ঠিক থাকলে মাত্র ১৮-২২ সেকেন্ডের মধ্যেই একজন যাত্রীর ইমিগ্রেশন শেষ হচ্ছে।
বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, চট্টগ্রামের পরিচালক মো. আবু সাইদ প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, এসব অত্যাধুনিক ই-গেট চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিপুলসংখ্যক মধ্যপ্রাচ্যে গমনাগমনকারী যাত্রীর ভোগান্তি লাঘব ও সময় সাশ্রয় করবে। আগামী দিনে আরও সুখবর হচ্ছে ই-ভিসাও চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের যা মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব গেট উদ্বোধনকালে বলেছেন।
তিনি বলেন, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ই-গেট এক মিনিটে তিন থেকে চারজন ই-পাসপোর্টধারী যাত্রীর ইমিগ্রেশন কার্যক্রম অনায়াসে নির্বিঘ্নে ও দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করতে সক্ষম।
পরিচালক সাইদ আরও বলেন, অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. নূরুল আনোয়ার মহোদয়ের সার্বিক তত্বাবধানে ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় ই-গেট স্থাপনের কাজ চলছে। ঢাকায় এখন পর্যন্ত ৫৭ হাজার যাত্রী এ সেবা নিয়েছেন।
দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বপ্রথম বাংলাদেশেই ই-পাসপোর্ট উদ্বোধন করা হয়। এতে ৩৮টি এর অধিক নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। বিশ্বের মধ্যে ১১৯-তম দেশ হিসেবে ২০২০ সালের ২২ জানুয়ারি বাংলাদেশে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) বা ই-পাসপোর্ট প্রবর্তিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। দেশে ই-পাসপোর্ট চালু হয়।
এক হিসেবে দেখা গেছে, ২০২০ সালের ২৩ মার্চ থেকে ২০২২ সালের আগস্ট পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসে ২ লক্ষ ১৭ হাজার ৩২৬টি পাসপোর্টের আবেদনের বিপরীতে ২ লক্ষ ১৭ হাজার ৩২৬ টি পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়।