মাসুম বিল্লাহ, শালিখা (মাগুরা)
শীত নিবারণে শালিখায় পুরনো কাপড়েই ভরসা
কথায় আছে উনো বর্ষায় দুনো শীত অর্থাৎ যে বছর বৃষ্টি কম হয় সে বছর শীত একটু বেশি হয়। বাংলার ষড়ঋতুর রঙ্গমঞ্চে একটু উল্লেখযোগ্য জায়গা জুড়ে শীতের অবস্থান। হেমন্তের সোনালী ডানায় ভর দিয়ে হিমেল হাওয়াকে সঙ্গে করে ও কুয়াশার চাদর গায়ে মুড়ে আগমন ঘটে শীতকালের।
মৃদু রোদের তাপ নিয়ে শীত আসে উদাসী পথিকের বেশে। পৌষ মাস জুড়ে থাকে তার অবস্থান। তবে এ বছর একটু আগে থেকেই দেখা মিলেছে শীতের। একটু আগে থেকেই শীতের আগমন ঘটায় শীতকাতর মানুষগুলো শীতবস্ত্র ক্রয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। বুধবার (১৭ নভেম্বর) উপজেলা সদর আড়পাড়া বাজারের ঐতিহ্যবাহী পুরাতন কাপড়ের বাজারে গিয়ে দেখা মেলে এমনই একটি চিত্র। যেখানে সোয়েটার, মাফলার, চাদর, জ্যাকেটসহ শীত নিবারণের নানাবিধ বস্ত্র পাওয়া যায় সুলভ মূল্যে।
তাই শীতবস্ত্র কিনতে গরিব, নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্তসহ সমাজের নানা অবস্থানের লোকজন ভিড় জমান সেখানে। কেউ কিনছেন মাফলার, কেউ জ্যাকেট, কেউ চাদর। তবে গত বছরের চেয়ে এ বছর দাম একটু বেশি বলে অভিযোগ করেন ক্রেতা সাধারণ। একটি মাফলার ১৫০, জ্যাকেট ৩০০, চাদর ৩০০, সোয়েটার ৩০০, হাত মোজা-পা মোজা ২০ থেকে ৫০ টাকা। যা গত বছরের চেয়ে একটু বেশি মনে করছেন অনেকেই। শীতবস্ত্র বিক্রেতা শাহাদাত হোসেন, আব্দুর সাত্তারসহ কয়েকজন বিক্রেতার সাথে কথা হলে তারা বলেন, আমরা মাগুরা এমনকি যশোর, ঝিনাইদহসহ বিভিন্ন জেলায় কাপড় সরবরাহ করি। যে বছর যে রকম মূল্যে ক্রয় করি সে বছর সে রকম মূল্যেই বিক্রি করি। পাশাপাশি এ বছর শীত একটু আগে থেকেই শুরু হওয়ায় ক্রেতাদের ভিড় অপেক্ষাকৃত বেশি।
শীত বস্ত্র ক্রয় করতে আসা নাজমুল হাসান নামের এক ব্যক্তি জানান, গত বছর একটি মাফলার কিনেছিলাম। এ বছর একটি ট্রাউজার ও একটি জ্যাকেট কিনতে আসলাম। তবে গত বছরের চেয়ে দাম একটু বেশিই মনে হচ্ছে।
অন্য একজন ক্রেতা আল আমিন হোসেন বলেন, বাজারে নতুন কাপড়ের দোকানের চেয়ে অনেক কম মূল্যে এখানে মোটামুটি ভালো মানের কাপড় পাওয়া যায় বলে প্রতি বছরই এখানে কাপড় কিনতে আসি। উপজেলা সদর শতখালী, ধনেশ্বরগাতী, তালখড়িসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের লোকজন কাপড় কিনতে আসেন এখানে। পুরাতন কাপড়ের দোকানে শুধু পুরাতন কাপড় নয়, অনেক নতুন কাপড়ও পাওয়া যায়। প্রতি শনিবার ও বুধবার দুপুর থেকে পুরাতন কাপড়ের পসরা সাজিয়ে সন্ধ্যা অবধি বসে থাকেন বিক্রেতারা। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের নজরদারিতে পুরাতন কাপড়ের বাজারটাকে আরো বেশি বড় পরিসরে সাজিয়ে তোলা হলে নিম্ন, মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষগুলো স্বল্প মূল্যে ভালো মানের শীতবস্ত্র পেত বলে মত প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল।