কে এইচ এম নূরুল আলম কামাল, মদন (নেত্রকোনা)

  ২৩ অক্টোবর, ২০২২

ছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাবের অভিযোগ 

মদনে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ 

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

পরীক্ষার দুদিন আগে ডিজিটাল মাধ্যমে প্রশ্নপত্র পাঠিয়ে এক ছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক সুহেলের বিরুদ্ধে। তিনি নেত্রকোনার মদন উপজেলার মাঘান ইউনিয়নের চৌধুরী তালে হোসেন মিছিলজান অ্যাকাডেমির প্রধান শিক্ষক। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের বিচার চেয়ে এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রবিবার (২৩ অক্টোবর) বিক্ষোভ করেছে। তবে এই বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক সুহেল মিয়া বলেছেন তিনি ছাত্রীকে প্রশ্নপত্র পাঠাননি। কোনো কু-প্রস্তাবও দেননি।

একজন প্রধান শিক্ষকের নামে এই নিন্দনীয় কাজে এলাকার অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পরীক্ষার প্রশ্নপত্রটি রবিবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। স্থানীয় লোকজন ও ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোনার মদন উপজেলার চৌধুরী তালে হোসেন মিছিলজান অ্যাকাডেমিতে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নির্বাচনী পরীক্ষা চলছে। রবিবার (২৩ অক্টোবর) বেলা ২টায় বিদ্যালয়ে গণিত সৃজনশীল পরীক্ষা হওয়ার কথা। সেই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র শুক্রবার (২১ অক্টোবর) রাতে এক ছাত্রীর ইমুতে পাঠান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুহেল মিয়া। পরে ওই ছাত্রীকে প্রেম নিবেদনসহ অনৈতিক মেলামেশার প্রস্তাব দেন প্রধান শিক্ষক। প্রধান শিক্ষকের এমন আচরণ ওই ছাত্রী তার পরিবারের লোকজনকে জানালে বিষয়টি সবার নজরে আসে। এ ঘটনায় রবিবার দুপুর ১২টার দিকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের বিচার চেয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি করেছে। ঘটনাটি এলাকার লোকমুখে ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই প্রশ্নপত্রটি রবিবার সংগ্রহ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম (ফেসবুক) পোস্ট করেন। এতে বিষয়টি ভাইরাল হলে অনেকেই প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবি জানান।

ভুক্তভোগীর ছাত্রীর বড় ভাই বলেন, ‘শুক্রবার রাতে সুহেল স্যার আমার বোনকে ফোন দিয়ে ইমুতে ফোন দিতে বলেন। কথা বলার পর ইমু নম্বরে গণিত পরীক্ষার প্রশ্ন পাঠান। পরীক্ষার প্রশ্নের বিনিময়ে আমার বোনের সঙ্গে অনৈতিক মেলামেশা করার প্রস্তাব দেন। রবিবার বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের রুমে আলাদা সময় না দিলে পরীক্ষার খাতায় নম্বর দেবে না বলে জানান। এতে ভয় পেয়ে আমার বোন বিষয়টি খুলে বলেন। একজন শিক্ষক এমন আচরণ করবেন তা আমরা কখনোই ভাবিনি। আমরা এই শিক্ষকের বিচার চাই।’

জয়বাংলা গ্রামের অনেক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, এর আগেও তিনি একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে এমন আচরণ করেছেন। ফলে অনেক ছাত্রী এই বিদ্যালয় ছেড়ে অন্য বিদ্যালয়ে গিয়ে ভর্তি হয়েছে। আমরা এই শিক্ষকরে বিচার চাই।

জানতে চাইলে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক সুহেল মিয়া বলেন, ‘কে বা কাহারা আমার ইমু নম্বর থেকে প্রশ্নপত্রটা ছাত্রীর কাছে পাঠিয়েছে তা আমি জানি না। প্রেম নিবেদন ও অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, বিষয়টা সমাধান করার জন্য এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলতেছি।’

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জি এম শামছুল আলম চৌধুরী কায়কোবাদ জানান, ‘বিষয়টা আমি শুনেছি।’

অ্যাকাডেমির সুপারভাইজার জোসনা বেগম জানান, প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে থাকলে পরীক্ষা বাতিল করা হবে। ছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার বিষয়ে ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানজিনা শাহরীন জানান, ভুক্তভোগী ছাত্রী বা তার পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
শিক্ষার্থী,শিক্ষক
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close