ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধি

  ২১ অক্টোবর, ২০২২

দুর্বৃত্তের আগাছানাশক স্প্রে, পুড়ল সাড়ে ছয় একর ধানগাছ 

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

নওগাঁর ধামইরহাটে সাড়ে ছয় একর জমির আমন ধান রাতের আঁধারে ক্ষতিকারক আগাছানাশক স্প্রে করে পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। উপজেলার ধামইরহাট ইউনিয়নের রামরামপুর ও আঙ্গরত মাঠে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী কৃষক সুষ্ঠু বিচার চেয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে চারজনকে আটক করেছে। আটকরা হলো আঙ্গরত কলোনীর শরিফুল ইসলাম (৪৪), আঙ্গরত কলোনীর ফারুক হোসেন (৩৪), তেলিপাড়ার মিলন হাঁসদা (২৯) এবং আঙ্গরত কলোনীর পিএ বর্মণ (৬০)।

ধামইরহাট থানায় লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ধামইরহাট ইউনিয়নের আঙ্গরত (রামরামপুর) গ্রামের কৃষক মো. শফিউল আলম রাজ দেওয়ান ও তার ভাই রাসেল দেওয়ান মিলে রামরামপুর মৌজায় সাড়ে তিন একর এবং আঙ্গরত মৌজায় তিন একর জমির নিজে কিছু অংশ এবং বর্গাচাষিরা বাকি অংশে আমন ধান চাষ করেন। কয়েক দিনের মধ্যে ধান গাছ থেকে শিষ বের হতো। অন্যান্য বারের তুলনায় এবার রোগ-বালাই কম থাকায় ধানের ভালো ফলন হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু গত ১৮ অক্টোবর দুই মৌজার মোট ১৯ বিঘা জমিতে রাতের বেলায় কে বা কারা ক্ষতিকর আগাছানাশক স্প্রে করে। পরের দিন সকালে বর্গাচাষি জমিতে গিয়ে দেখেন ধানগাছগুলো মরে যাচ্ছে। দূর থেকে দেখতে মনে হচ্ছে ধান পেকে সোনানি রং ধারণ করেছে। ওই জমিতে থেকে প্রতি বছর আমন ধান প্রায় ৩৬০ থেকে ৩৮০ মণ হতো। এতে তাদের প্রায় চার লক্ষাধিক টাকা ক্ষতি হয়েছে।

আঙ্গরত কলোনি গ্রামের বর্গাচাষি মো. রবিউল ইসলাম বলেন, তিনি সোয়া দুই একর জমিতে ধারদেনা করে স্বর্ণা-৫ জাতের ধান চাষ করেছেন। কিন্তু দুর্বৃত্তরা রাতে ধান গাছে ক্ষতিকর আগাছা স্প্রে করে তার সোনালি স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে।

রামরামপুর তেলিপাড়া গ্রামের বর্গাচাষি ও ভ্যানচালক মো. ফারুক হোসেন জানান, রাজ দেওয়ানের কাছ থেকে বর্গা নিয়ে তিনি এক একর জমিতে আমন ধান রোপণ করেন। ভ্যান চালিয়ে অনেক কষ্ট করে ধান চাষ করেছি। কিন্তু মানুষরূপি পশুরা তার ধানগাছগুলো পুড়িয়ে দেওয়ায় আমি এখন অন্ধকার দেখছি।

ওই জমির অন্যতম মালিক শফিউল আলম রাজ দেওয়ান বলেন, আমার ভাই শাহিন কাদির রাসেল দেওয়ানের সঙ্গে একত্রে জমিগুলো চাষ করেছি। কিছু জমি বর্গা দিয়েছি। দুই মৌজায় মোট ১৯ বিঘা জমির স্বর্ণা-৫ জাতের আমন ধান ছিল। ক্ষতিকর আগাছানাশক স্প্রে করায় ক্ষেতের সব ধান গাছ পুড়ে গেছে। প্রতি বছর ১৯ বিঘা জমিতে থেকে প্রায় ৪০০ মণ পাওয়া যেত। এবার এক ছটাক ধানও পাওয়া যাবে না। এতে প্রায় চার লক্ষাধিক টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে শফিউল আলম বাদী হয়ে তার বড় চাচা দেওয়ান সিদ্দিকুর রহমান (৬৫) কে হুকুমের আসামি করে মোট ১৩ জনের নামে থানায় অভিযোগ করেছেন।

ধামইরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মোজাম্মেল হক কাজী বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার সকালে পুলিশ ক্ষতিগ্রস্ত ধানখেত পরিদর্শন করেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে চারজনকে আটক করা হয়েছে। বাকি আসামিদের আটক করার চেষ্টা চলছে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ধামইরহাট
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close