বশির আহম্মেদ মোল্লা, নরসিংদী

  ২০ অক্টোবর, ২০২২

নরসিংদীতে নির্মিত হচ্ছে নতুন দুটি সার কারখানা

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

ইউরিয়া সারের আমদানি কমিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ে নরসিংদীর পলাশে নতুন দুটি সার কারখানা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। জাইকা ও সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে এ দুটি কারখানা নির্মিত হবে। এ জন্য ‘ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার প্রকল্প (প্রথম সংশোধন)’ একনেকের অনুমোদন পেয়েছে।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রের তথ্যমতে, নরসিংদীর পলাশে বিদ্যমান দুটি ইউরিয়া সার কারখানা যথাক্রমে ইউরিয়া ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি লিমিটেড ও পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি লিমিটেডের স্থলে দুটি নতুন সার কারখানা নির্মিত হচ্ছে। নির্মিত এ দুটি কারখানায় দৈনিক দুই হাজার ৮০০ টন হিসোবে বার্ষিক ৯ লাখ ২৪ হাজার টন গ্রানুলার ইউরিয়া সার উৎপাদিত হবে। এতে দেশে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে ইউরিয়া সারের চাহিদা মেটানো এবং সুলভ মূল্যে কৃষকদের কাছে সার সরবরাহ নিশ্চিত করা যাবে, পাশাপাশি দেশে ইউরিয়া সারের আমদানি কমিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় এবং দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। মোট ১৫ হাজার ৫০০ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি)। আগামী ২০২৪ সালের ৩০ জুন কাজ শেষ হবে প্রকল্পটির। প্রকল্পের মোট ব্যয়ের মধ্যে জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন, ব্যাংক অব টোকিও মিতসুবিশি ইউএফজে লিমিটেড, জাপান এবং এইচএসবিসি, হংকং প্রকল্প ঋণ বাবদ দেবে ১০ হাজার ৯২০ কোটি টাকা। বাকি ৪ হাজার ৫৮০ কোটি ২১ লাখ টাকা জোগান দেয়া হবে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে।

সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের অক্টোবরে শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছিল। কয়েকটি কারণে পরে প্রকল্পটি সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রকল্প সংশোধনের কারণ সম্পর্কে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় যেসব বিষয় চিহ্নিত করে সেগুলো হলো বিভিন্ন প্রক্রিয়াগত কারণে ঋণচুক্তি বিলম্বিত হওয়ায় বাণিজ্যিক চুক্তির বিলম্বে কার্যকর হওয়া, বিডার্স ফাইন্যান্সিংয়ের ২৭৪ দশমিক ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সমপরিমাণ ২ লাখ ৩০ হাজার ৩২৮ লাখ টাকা প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয়ে অন্তর্ভুক্তি, সিডি ভ্যাট, রেললাইন স্থাপন, বৈদ্যুতিক লাইন স্থাপন, লোন ব্যবস্থাপনা ফি, ইনস্যুরেন্স ও রেজিস্ট্রেশন ফি, কেমিক্যাল পণ্য, মেশিনারিজের জন্য লুব্রিকেন্ট ও ট্রায়াল রানের জন্য গ্যাস ক্রয়। তাছাড়া রয়েছে আবাসিক ভবন নির্মাণ বাবদ ব্যয় বৃদ্ধি, নতুন অঙ্গ হিসেবে জেনারেল কন্ট্রাক্টরদের আয়কর (চুক্তি অনুসারে), সরকারি বিভিন্ন লাইসেন্স ফি, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি, অডিট ফি ও অনুষ্ঠান খাত সংযোজন, অর্থ বিভাগের নির্দেশনা অনুসারে ইকনোমিক কোড বা সাব কোড হালনাগাদকরণ, কিছু কার্য ও পণ্য ক্রয়ের পদ্ধতি পুনর্নির্ধারণ এবং কিছু কার্য ও সেবা খাতের পরিমাণ পরিবর্তন এবং কোভিড অতিমারির কারণে কারখানা সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি আমদানিতে বিলম্ব হওয়া।

পরিকল্পনা কমিশন জানায়, প্রকল্পের আওতায় দৈনিক ২ হাজার ৮০০ টন গ্রানুলার ইউরিয়া সার উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন নতুন সার কারখানা স্থাপনের লক্ষ্যে যন্ত্রপাতি/ইক্যুইপমেন্ট সংগ্রহ ও স্থাপন করা হবে। সার কারখানার রেললাইনের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ ও রেললাইন নির্মাণ করা হবে। পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম জানিয়েছেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশে সারের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। এতে সারের আমদানিনির্ভরতা কমবে। দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। এসব দিক বিবেচনায় নিয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের এ উদ্যোগটি কল্যাণকর বলে সরকার একনেকে প্রকল্পটি অনুমোদন দিয়েছে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
নরসিংদী
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close